আমার দুর্ভাগ্য কপাল। টাকার অভাবে পূজায় পরিবারের সদস্যদের একটা নতুন কাপড় কিনে দিতে পারছি না। ছোট শিশুটার জন্যও কিছু কিনতে পারিনি। আমার অসুস্থ্যতার জন্যই এই অবস্থা, এবার পূজায় পরিবারের শিশুদের কিছু কিনে দিতে পারবো কিনা জানিনা!’ ঘরের একমুঠো খাবার জুটাতেই বর্তমান বাজারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে আকুতি প্রকাশ করেন ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের নওদাপাড়া গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা দীপক ঠাকুর (৫৭) সহ আরো ৩পরিবার। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজা। এই উৎসবকে ঘিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রতিটি পরিবারে চলে উৎসবের আমেজ। কিন্তু নতুন পোশাক তো দূরের কথা বাজারও করতে পারেননি দাশুড়িয়া (নওদাপাড়া) গুচ্ছ গ্রামের দীপক ঠাকুরের পরিবার।
চারিদিকে আনন্দ উৎসবের আমেজ এলেও পূজায় নতুন কাপড় কিনতে না পাড়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করেন ৫৭ বছরের দীপক ঠাকুর ও তার পরিবারের সদস্যরা। চার সন্তান ও স্ত্রী নিয়েই দীপক ঠাকুরের সংসার। তার স্ত্রী ছোট বাচ্চাদের রেখেও কোন কাজ করতে যেতে পারছেন না তার স্ত্রী। সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি দীপক ঠাকুর। রাতভর ভ্যান চালিয়ে পরিবারে খাদ্যের যোগান দেন এর সাথে আছে আবার কিস্তির বোঝা। কিস্তি দিয়ে খাবার কিনতেই তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। এখানেই শেষ নয়। কীভাবে তার সংসার চলবে? এ দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। এ যেন ‘অভাগা যেদিকে তাকায় সাগর শুকিয়ে যাওয়ার’ অবস্থা। অবুঝ শিশুদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তাদের সম্বল বলতে ঋণ করে কেনা এ ভ্যান আর সরকারের ঘর। এ ছাড়া আর কিছুই নেই। গুচ্ছ গ্রামেই একটি ঘরে অতিকষ্টে টিকে আছেন পরিবারটি।
এদিকে দীপক ঠাকুর গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা হিসেবে যেখানে সুবিধা পাওয়ার কথা পান না ইউনিয়নের কোন সুবিধা বা কার্ড, বঞ্চিত প্রায় সব ধরনের সেবা থেকে। দীপক ঠাকুর বলেন, আইডি কার্ডের অনেক ফটোকপি জমাদি ইউনিয়নের লোকজনের কাছে পরে কোন কিছুই আর পায়না, তাই আর যায়না। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের এই আগুন বাজারে এ কেমনে চলবে তাদের সংসার? আবার বয়সের ভাঁড়ে প্রতিদিন কাজেও যেতে পারেনা। কোন রকমে একবেলা দু-মুঠো খেয়ে কোনো রকমভাবে বেঁচে আছেন। এসব করুণ জীবনের গল্প শোনার আজ যেন কেউ নেই। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, দূর্গা পূজা উৎসবকে ঘিরে উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে অনুদান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে কাউকে কিছু দেয়া হয়নি।