শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

ইসলামের আলোকে সাংবাদিকতা – মাওলানা: শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩, ৮:৩৩ অপরাহ্ণ

ইসলামের আলোকে সংবাদ সম্পর্কে লিখবো তা জানতেই বা লিখতে যেন আমার গা শিউরে ওঠে জানিনা কেমন হবে, তারপরও আমি ক্ষুদ্র সংবাদ কর্মী হিসেবে সামান্য কিছু লেখার চেষ্টা।
সাংবাদিকতার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে- তা হল বিভিন্ন ঘটনাবলী, বিষয়, ধারণা, মানুষ সম্পর্কিত প্রতিবেদন তৈরি, পরিবেশন, যা উক্ত দিনের প্রধান সংবাদ এবং তা সমাজে প্রভাব বিস্তার করে। এই পেশায় শব্দটি দিয়ে তথ্য সংগ্রহের কৌশল, সাহিত্যিক ইসলামি উপায় অবলম্বনকে বোঝায়। মুদ্রিত, টেলিভিশন, বেতার, ইন্টারনেট, অনলাইন, পোর্টাল এবং পূর্বে ব্যবহৃত নিউজরিল সংবাদ মাধ্যমের অন্তর্গত।
লেসলি স্টীফেন বলেন, যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে তুমি অজ্ঞ সে বিষয়গুলোর ওপর পারিশ্রমিক নিয়ে লেখাই হচ্ছে সাংবাদিকতা ।
ই.ঘ অযঁলধ তাঁর ঞযবড়ৎু ধহফ ঢ়ৎধপঃরপব ড়ভ লড়ঁৎহধষরংস বইতে বলেছেন, “সাংবাদিকতা হল সামাজিক কার্যাবলির ঐ অংশ যেটি সমাজের সংবাদ এবং মতার্দশ প্রচারের সঙ্গে যুক্ত।”
স্যার এরিখ হজিতস্ বলেন- সঠিক, পরিজ্ঞাত ও ত্বরিতগতিতে তথ্যাদির এদিক-ওদিক এমনভাবে প্রেরণ যাতে করে সত্য পরিবেশিত হয় এবং তাৎক্ষণিক ভাবে না হলেও সব তথ্যের যথার্থতা ধীরে ধীরে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ডেভিড ওয়েন রাইট বলেছেন- জীবন, সমাজ ও রাষ্টের গতি প্রকৃতি বর্ণনার একটি কৌশল । চিন্তা ধারার উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ইসলাম রূপান্তরের ধারক ও বাহক হল সাংবাদিকতা। আর একটি সংবাদপত্র হচ্ছে এক একটি দিনের ইতিহাস বা ঐ সমাজের প্রতিচ্ছবি। সাংবাদিকতা হচ্ছে শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্ম, দর্শন, বিনোদন প্রভৃতি বিকাশের মূল বাহন। বর্তমানে রেডিও, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট, ইন্টারনেট প্রভৃত্তির কল্যাণে সাংবাদিকতা আগের মত কাগজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তাই বলা যায়, সাংবাদিকতা বর্তমানে মানুষের আচার-অনুষ্ঠান, কাজ-কর্মে প্রভাব বিস্তারকারী সবচেয়ে শক্তিশালী একটি উপাদানের নাম সাংবাদিকতা।
সাংবাদিকতায়-ইসলাম
সাংবাদিকতা’ শব্দটি এসেছে সংবাদ থেকে, যার ইংরেজি প্রতিশব্দ হল নিউজ এবং আরবী প্রতিশব্দ হল খবর, হাদিস, কিসসা বা নাবা। এই নাবা থেকেই নবি। নবি শব্দের অর্থ সংবাদদাতা, সংবাদ বাহক, দূত ইত্যাদি। এই দৃষ্টিতে প্রত্যেক নবিই একেকজন সাংবাদিক তা অনায়াসে বলা যায়। কুরআন ও হাদিসে ’নাবা’ শব্দটি অনেকবার এসেছে। ৩০তম পারার প্রথম সূরাটির নাম ‘আন্নাবা’ তথা সংবাদ।
যেহেতু প্রত্যেক নবী-রাসুল আল্লাহর দেয়া সংবাদ পৃথিবীর মানুষদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন সেহেতু তাঁরা মূলত ইসলামিক সাংবাদিক তথা ইসলামের সংবাদ কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
এতে বুঝা স্পষ্ট যায়, সাংবাদিকতা এক মহান, মহৎ, মর্যাদাশীল ও দায়িত্বপূর্ণ পেশা। ইসলামে সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি তিনটি- (এক) ‘দাওয়াত ইলাল খাইর’ তথা কল্যাণের পথে আহ্বান। (দুই) সৎ, সত্য ও ন্যায়ের আদেশ। (তিন) অসৎ, অসত্য ও অন্যায় থেকে বাধা প্রদান।
খবরের সত্যতা যাচাইঃ- ইসলামে সততা ও সত্যবাদীতার গুরুত্ব অপরিসীম। মিথ্যা বলা মহাপাপ বা কবিরা গুনাহ। আনাস (রাঃ) বলেন, একদা রাসুল (সাঃ)কে কবিরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল।
তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা, মা-বাবার অবাধ্য হওয়া। কাউকে হত্যা করা আর মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়াথ বুখারি শরীফ ।
তাই সংবাদের তথ্য যাচাই ও সত্যতা নিরূপণ করা সাংবাদিকের অপরিহার্য কর্তব্য। শোনা কথা বা ব্যক্তি বিশেষের দেয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে সংবাদ পরিবেশন জায়েয নয়।
মহান আল্লাহ তায়াল পবিত্র কোরআনে বলেন, হে মুমিনগণ, যদি কোনো পাপাচারী তোমাদের কাছে কোনো বার্তা নিয়ে আসে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে। যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি সাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে যাতে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদের অনুতপ্ত হতে না হয়’- (সূরা আল হুজুরাত-৬)।
মহানবি (সাঃ) বলেছেন, ‘যা শুনবে, তা-ই (যাচাই করা ছাড়া) প্রচার করা মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট- (মুসলিম শরিফ)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com