চলনবিলে মসলা জাতীয় ফসল রসুন চায়ে হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে। চলনবিলের ‘সাদা সোনা’ হিসেবে পরিচিত রসুনের আশাতীত ফলনে এবার কৃষকরা অনেক খুশি। ধানের থেকে রসুন চাষে লাভ বেশি হওয়ায় তারা ঝুঁকছেন রসুন আবাদের প্রতি। বিনা চাষে রসুন বুইনে দ্বিগুণ লাভ, খাটনি কম খরজও কম।
চলনবিলের চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, রসুন তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শত শত নারী-পুরুষ। এ বছর রসুনের ফলন বাম্পার ও দামেও খুশি কৃষকরা। এ বছর প্রতি বিঘায় ফলন ৩০ থেকে ৩৫ মণ। গত বছর এসময় রসুনের বাজার দর ৮শ টাকা থেকে ১৫শ টাকা মণ ছিল। এবছর শুরুতেই কৃষক বাজারে বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৮শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে।
একই জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির কৃষিপণ্য উৎপাদনের কারণে উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিল অঞ্চলের চাষাবাদ বরাবরই বৈচিত্রময়। বিল অঞ্চলের বৈচিত্রময় কৃষি কাজে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বিনাচাষে এ রসুন উৎপাদন। স্বল্প ব্যয়ে বিনা চাষের রসুন উৎপাদনে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে প্রতিবছরই ব্যাপকভাবে বাড়ছে মসলা জাতীয় এই কৃষিপণ্যের উৎপাদন।
উপজেলার মামাখালি গ্রামের রসুন চাষি আহেদ আলী সে এ বছর প্রায় ২ বিঘা মজিতে রসুন চাষ করেছেন এবং বরদানগর গ্রামের রসুন চাষি আতিকুল ইসলাম সেও প্রায় ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন। তারা বলেন, প্রতি বিঘা জমির জন্য বীজ বাবদ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা, সার-কীটনাশক প্রায় ৭ হাজার, নিড়ানি ও সেচ বাবদ প্রায় ৬ হাজার এবং কৃষি শ্রমিকের মজুরি প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে তাদের প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ মণ হারে রসুন পাওয়া যাবে। বর্তমানে বাজারে প্রায় ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আশা করছেন প্রতি বিঘা জমি থেকে খরচ বাদে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভ করবেন।
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ. মাসুম বিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে চাটমোহর উপজেলায় ৩ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। এ বছর হেক্টর প্রতি গড় ফলন প্রায় ১০ মেট্রিক টন। বিনাচাষে আবাদ করা রসুনের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজারে দামও ভাল পাওয়ায় খুশি চাষিরা। প্রতিবছর রসুন আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।