পাবনার ভাঙ্গুড়ায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিকভাবে নিম্নমানের গো-খাদ্য উৎপাদন ও বিক্রি করছে ৪/৫ টি প্রতিষ্ঠান। এতে উপজেলার খামারীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানকে মাঝে মধ্যে জরিমানা করলেও স্থায়ীভাবে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তবে গত বুধবার (২২ মার্চ) উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডকে দণ্ডনীয় অপরাধ উলেখ করে নোটিশ জারি করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার পৌর শহর সহ বিভিন্ন এলাকায় গো-খাদ্য বিক্রির জন্য প্রায় অর্ধশত দোকান রয়েছে। শুধুমাত্র স্থানীয় প্রশাসনের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই চলছে এসব দোকান। এছাড়া প্রায় ৪/৫টি প্রতিষ্ঠান ভারত সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিম্নমানের গো-খাদ্য আমদানি করে মেশিনে পুনরায় রিফাইন্ড করে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা ভাঙ্গুড়া সহ জেলার আশেপাশের উপজেলায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করছে। কৃতাদের কাছে বেশি দামি বিক্রি করতে বিভিন্ন নামিদামি ব্রান্ডের বস্তায় তারা নিম্নমানের গো-খাদ্য ভরে মেশিনে সেলাই করে ও স্টিকার লাগিয়েও বিক্রি করছে এসব প্রতিষ্ঠান।
গো-খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আলহাজ্ব ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শাহিনুর রহমান বলেন, বাজারের অনেকেই ভেজাল গো-খাদ্যের ব্যবসা করে। এটা বৈধ বা অবৈধ হোক প্রশাসন দেখবে। সাংবাদিক দেখার কেউ না। ইউএনও এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সবই জানে। এখন থেকে আমার প্রতিষ্ঠানে কোন সাংবাদিক প্রবেশ করতে দেবো না।
আরেক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, মোবাইলে ছবি দেখে ভারত থেকে গো-খাদ্য আমদানি করা হয়। তাই মাঝে মাঝে নিম্নমানের খাদ্য আসলে তা রিফাইন করে করে দেশের বিভিন্ন কোম্পানির বস্তা ব্যবহার করা হয়। তবে ক্রেতাদের এই খাদ্য ভারতের এলসি পণ্য বলেই জানানো হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, ভাঙ্গুড়া গো-খাদ্য উৎপাদন কিংবা বাজারজাতকরণ কাজে জড়িত কোন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স কিংবা দেশের বাহির থেকে পণ্য আমদানি করার লাইসেন্স নেই। অথচ তারা ভারতের পণ্য দেশে এনে বিক্রি করছেন। তাই এটি দণ্ডনীয় অপরাধ উল্লেখ করে সবাইকে নোটিশ করা হয়েছে। দণ্ডনীয় অপরাধ হলে বছরের পর বছর কিভাবে চলছে এমন কাজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, গো-খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করণের সাথে সংশিষ্ট এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারি অনুমোদন না থাকায় কিছুদিন আগে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হয়েছে। এখন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে চুড়ান্তভাবে আইনগত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।