পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরিষা ক্ষেত থেকে বাণিজ্যিক ভাবে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে মৌচাষিরা। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। এ মৌসমে প্রায় কোটি টাকার মধু সংগ্রহ হবে বলে আশা করছেন মৌচাষিরা।
মৗচাষিরা জানায়, প্রতি বছর ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সরিষার ক্ষেত থেকে প্রায় কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও যশোর, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৌচাষিরা এসে মধু সংগ্রহের জন্য সরিষা ক্ষেতের পাশে হাজার হাজার মৌমাছির বাক্স বসিয়ে দিন-রাত মধু সংগ্রহ করছে। প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকেই মধু সংগ্রহের কাজ শুরু করে মৌচাষিরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্নঞ্চলের দিগন্ত জোরা মাঠ হলুদের সমারোহে ভরে গেছে। সরিষা ক্ষেতের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে সারিবদ্ধ ভাবে মৌমাছির বাক্স। লাখলাখ মৌমাছি সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছে। প্রতিটি মৌমাছির বাক্সে প্রায় এক লাখ করে কর্মী মৌমাছি ও একটি করে রানী মাছি থাকে। রানী মাছি ডিম দেয়। সারাদিন মধু সংগ্রহকারী মৌমাছি গুলো সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত থাকে। প্রতিটি মৌমাছির বাক্স থেকে আট-দশ দিনপরপর ২৫-৩০ কেজি মধু সংগ্রহ হয়।
এ উপজেলায় এসে মধু সংগ্রহকারি উল্লাপাড়ার মৌ চাষী ইউসুব আলী বলেন, ডিসেম্বর থেকে শুরু করে মে মাস পর্যন্ত সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহ করা হয়। বছরের ছয় মাস তারা মধু সংগ্রহ করে, অন্য ছয়মাস মৌমাছি পালন করে। তিনি দুই জন কর্মচারী ও ১২০টি মৌমাছির বাক্স নিয়ে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ান গ্রামের সরিষার ক্ষেতের মাঠে এসেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এবছর অনেক বেশি মধু সংগ্রহ হচ্ছে। বর্তমানে তারা মধু বিক্রি করছেন ৪০০ টাকা কেজি দরে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা: শারমিন জাহান জানান, এ উপজেলায় এ বছর ৫ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। মধু সংগ্রহের জন্য মৌচাষিদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দেশে অনেক বেকার যুবক রয়েছেন। তারা সরকারিভাবে ট্রেনিং নিয়ে মৌচাষ করলে বেকারত্ব অনেক কমে যাবে এবং বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে পারবেন।