মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

বাগাতিপাড়ায় পোল্ট্রি খামারীর বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২, ২:৫৬ অপরাহ্ণ

পোল্ট্রি খামারের বিষ্টাসহ অন্যান্য বর্জ উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র দুর্গন্ধ। খামারের আশপাশের বসবাসকারীগণ, পথচারী ও বাজার এলাকার মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে এই দুর্গন্ধে। নীতিমালা উপেক্ষা করে পরিবেশ দূষণের এমন ঘটনা বাগাতিপাড়া উপজেলার তামালতলা বাজার এলাকায়। খামার মালিক উপজেলার নূরপুর চকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মানিক আলী। চিকিৎসকরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে খামার এলাকার মানুষের স্কীন ডিজিজ, ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন ধরণের রোগের সৃষ্টি হবে। বাধ্য হয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয়রা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন রাজিউজ্জামান মিস্টার। এদিকে প্রকাশ্যে এমন পরিবেশ দূষণের অভিযোগ করে বিপাকে রয়েছেন তিনি। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছেন দ্রুতই আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তমালতলা বাজারের পশ্চিম দিকে পাকা রাস্তার পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে টিনসেড মুরগীর বড় একটি খামার। ঘনবসতিপূর্ণ ও বাজার এলাকায় স্থাপন করা খামারটি পাশেই রয়েছে মসজিদ ও স্কুল। খামারের উত্তর-দক্ষিণ পাশের পাকা সড়ক দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও মসজিদের মুসল্লী ছাড়াও প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করেন। খামারটির পাশেই আছে বেশ কিছু খাবারের দোকান সেখানে সকাল থেকে রাত অবদি মানুষের আনাগোনা থাকে।

খামার এলাকায় বসবাসকারী স্থায়ী বাসিন্দা শিক্ষক তয়েজ মাহমুদ বলেন, দুর্গন্ধ এতো তীব্র হয় যে, বাড়ীতে অবস্থান করা কঠিন হয়ে যায়। তেমনী খাবার খেতে অরুচি আসে। আর মানুষ সহ পশু-প্রাণীর বিভিন্ন রোগ সারাবছর লেগেই থাকে। ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে এমন খামার থাকায় সকলেই খুব কষ্টে বসবাস করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

স্থানীয়দের দাবি, মুরগীর বিষ্টার দূর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। খামার এলাকার বিভিন্ন মানুষের গায়ে দেখা দিয়েছে চর্ম রোগ। পরিবেশ দূষণের বিষয়ে খামার মালিককে বলা হলেও তিনি আমলে নেয়না। বরং যিনি বলতে যান, তার সাথেই অসধাচরণ করেন। তাই বাধ্য হয়ে সম্প্রতি স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগকারী রাজিউজ্জামান মিস্টার’র দাবি, পরিবেশ দূষণ রোধে অভিযোগ করে তিনি যেন, মহা অপরাধ করেছেন। একদিকে অভিযুক্ত খামার মালিক নানান কথা বলছেন, আবার অভিযোগ তদন্তকারী বলছেন, কেন অভিযোগ করলেন? তিনি কি এখন খামার বন্ধ করেদেবেন।
আর এসকল বিষয়ে খামার মালিক কোন মন্তব্য করতে চাননি।

খামার এলাকার মানুষের কোন স্বাস্থ্য ঝুকি আছে কি-না? এমন প্রশ্নে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মুরগীর খামার করা উচিত নয়। মুরগীর বিষ্টার কারণে পানি ও পরিবেশ মাত্মকভাবে দূষিত হয়, এটি পরিবেশের জন্য হুমকি। এর কারণেই মানুষের শরীরে চর্মরোগ ও ডায়রিয়া সহ নানা কঠিন অসুখ দেখা দেয়।

বাণিজ্যিক মুরগীর খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোতি এবং জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নে অভিযোগ তদন্তকারী উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আবু জাফর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন দাবি করে বলেন, আমি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী বরাবর দিয়েছি, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারঃ) সুরাইয়া মমতাজ বলেন, পরিবেশ দূষণ করাটা অপরাধ। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন। অচিরেই দোষী ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর