সম্পাদকীয়
কারোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ঘোষিত সাধারণ ছুটি এক মাস পেরিয়ে গেছে। শুরু থেকেই সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার জন্য বলা হচ্ছে। অঘোষিত লকডাউনে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে করে দিনমজুর ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষকে এখন জীবন রক্ষার লড়াই করতে হচ্ছে। ঘরে খাবার নেই। অথচ কোথাও যাওয়ারও জায়গা নেই। আগে প্রতিদিন কাজ জুটত, এখন কোথাও কোনো কাজ নেই। ফলে ত্রাণের আশায় দাঁড়িয়ে থাকা ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা বাড়ছে সড়কে।
সামাজিক দূরত্বের কথা মুখে বলা হলেও বাস্তবে তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না শুধু ত্রাণের আশায় ঘরের বাইরে আসা মানুষের কারণে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঘোষণা ও লকডাউন শুরুর পর ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য ব্যাপক তোড়জোড় দেখা গেলেও এখন সে ব্যাপকতা নেই; কোথাও কোথাও রয়েছে বিছিন্নভাবে, অল্প পরিসরে। শুরুর দিকে বিভিন্ন ব্যক্তি, সামাজিক সংগঠন ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নিজেদের অর্থে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভাসমান লোকদের মাঝে রান্না করা খাবারও বিতরণ করতে দেখা গেছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, দেশে করোনাভাইরাস উপস্থিতি ঘোষিত হওয়ার পর দরিদ্র জনগোষ্ঠী এ পর্যন্ত ব্যক্তিগত উদ্যোগ, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জেলাগুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে এবং প্রধানমন্ত্রীর উপহার—এই তিন ধরনের ত্রাণ পেয়েছে। সরকার প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোয়া কোটি পরিবারকে নতুনভাবে তালিকা করে দুই ধরনের কার্ড দিচ্ছে। এগুলো হচ্ছে—ওএমএস ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মানবিক সহায়তা কার্ড। এই দুই ধরনের কর্মসূচির উপকারভোগীর তালিকা তৈরির কাজ চলছে। অন্যদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পরিবারভিত্তিক যে মানবিক সহায়তা কার্ডের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তা তালিকা তৈরির মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কোনো জেলার তালিকাই শেষ হয়নি। ফলে ত্রাণ ও সহায়তার দাবিতে দিন দিন সড়কে ভাসমান লোকের সংখ্যা বাড়ছে।
এ অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানো। আমরা আশা করব স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের কাছে খাদ্য ও নগদ অর্থ সাহায্য পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।