আওয়ামী লীগের ভয়ে অফিস খোলেনা বিএনপি। দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ রয়েছে জেলা বিএনপির কার্যালয়। দলীয় অধিকাংশ কর্মসূচীই পালিত হচ্ছে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেনের চেম্বারে। মাঝে মধ্যে চেম্বারের সামনের সড়কে মানব বন্ধন করে দলটি। অন্যদিকে বিএনপির কর্মসূচীর দিন মাঠ দখলে থাকে আওয়ামী লীগের। এ দিন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ে বিক্ষোভ করে। পরে দলীয় নেতাকর্মীরা মটর সাইকেলে মহড়া দেয় গোটা শহরে।
ইতোপূর্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা আইনজীবী সমিতি ও জেলা কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলেও পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতা কর্মীদের বাধায় তা পন্ড হয়ে যায়। এরপর থেকেই জেলা বিএনপি ঘরোয়া কর্মসূচীতে চলে যায়। তবে বিএরপির নেতাদের দাবি তারা সংগঠিত হচ্ছে। যেকোন সময় তারা প্রকাশ্য কর্মসূচী পালন করবেন। অন্যদিকে আওয়ামী নেতারা বলছেন, ঝালকাঠিতে যে কোন ধরনের নৈরাজ্য তারা প্রতিরোধ করবেন। দু পক্ষের এ অবস্থানের কারনে ঝালকাঠি জেলার রাজনীতি ক্রমেই উত্তপ্ত হতে চলছে।
এক সময় ঝালকাঠির দুটি আসনকে ধানে শীষের ঘাটি বলা হতো। কিন্তু সে অবস্থা বিএনপির এখন আর নেই। জেলায় দলের নেতৃত্ব সংকট ও আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে দলটি কর্মসূচীতে শক্তি প্রদর্শন করতে পারছেনা। জেলার মনোনয়ন প্রত্যাশিদের আন্দোলনে সংগ্রামে মাঠে থাকার কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকলেও একমাত্র রফিকুল ইসলাম জামাল (ঝালকাঠি-১ আসন) ব্যতিত আর কোন এমপি প্রার্থীকে জেলা বিএনপির কোন কর্মসূচীতে দেখা যায়না। জেলা বিএনরপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা জানান, দলের পূর্নাংগ কমিটি না করলে আন্দোলনে গতি আসবেনা। তাই অবিলম্বে কমিটি ঘোষনার দাবি জানান তারা। উল্লেখ্য বর্তমানে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে অফিস না খোলা এবং প্রকাশ্য কর্মসূচী পালন করতে না পারা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন বলেন, চারবার বিএনপি কার্যালয় ভাঙ্গা হয়েছে। দুই মাস ধরে কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। এখানে বসার পরিবেশ নেই। কমূসূচী পালন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সকল কর্মসূচীই পালন করি। কিন্তু সব কর্মসূচীতেই পুলিশ ও সরকারী দল আমাদের বাধা দেয়।
এদিকে ক্ষমতার তিন মেয়াদে ঝালকাঠিতে যথেষ্ঠ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠন। দলের প্রতিটি কর্মসূচীতেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবকলীগের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। তবে মাঠের কর্মসূচীকে মহিলা আওয়ামী লীগের তেমন কোন তৎপরতা চোখে পরেনা। প্রতিটি কর্মসূচীতেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা জানান, ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ এখন যে কোন সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। তাই বিএনপি আন্দোলনে মাঠে নামলেও ঝালকাঠির রাজনীতির মাঠ আওয়ামী লীগের দখলেই থাকবে বলে তারা মনে করেন।
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির বলেন, বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচী রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে। তবে বিএনপি যদি বিশৃংখলা করার চেষ্টা করে, তাহলে জনগন তাদের প্রতিহত করবে।