শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

ই-পেপার

পেয়ারা বিক্রি করে প্রতিবন্ধী সন্তানসহ ৭ জনের সংসার চালান দরিদ্র সাজেদুল

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
ছবি: পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে পেয়ারা বিক্রি করছে দরিদ্র সাজেদুল।

মা-বাবার স্বপ্ন ছিল আদরের সন্তান পড়া-লেখা করে বড় হয়ে একজন মস্ত বড় অফিসার হবে। ছেলেকে পড়া-লেখার জন্য ভর্তিও করে ছিলেন স্থানীয় এক স্কুলে। ছাত্র হিসাবেও ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু না, দারিদ্রতার কারণে মা-বাবার সে স্বপ্ন পূরণ হলো না। স্কুলের গন্ডি না পেরুতেই শুরু হয় জীবন-জীবিকার যুদ্ধ। সংসারে অভাব-অনাটনের কারণে ৩য় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় আর স্কুলে যাওয়া হলো না সাজেদুল ইসলামের। বয়স তার ৩৫ বছর। সে পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের দরিদ্র তোফাজ্জল ইসলামের ছেলে।

দীর্ঘ দিন ধানের চাতালে কাজ করতেন। অসুস্থ্যতার কারণে শারিরীক প্ররিশ্রম করতে না পেরে শেষে শুরু করেন পেয়ারা বিক্রি। এলাকার সবাই তাকে এখন পেয়ারা ওলা হিসেবে চেনে। জীবন-জীবিকার তাগিদে তিনি দীর্ঘ ৪ বছর ধরে একটি ভ্যানের উপরে করে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও হাট-বাজারে পেয়ারা কেটে ও ঝালমুড়ি বিক্রি করে ১১ বছরের এক প্রতিবন্ধী সন্তানসহ ৭ জনের সংসার কোনমতে চালাচ্ছেন সাজেদুল।

সাজেদুল ইসলাম জানান তার জীবন যুদ্ধের গল্প। পেয়ারা বিক্রেতা হওয়ার কথা ছিল না তার। পড়া-লেখা শিখে মা-বাবার লালিত স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দীর্ঘ দিন ধানের চাতালে কাজ করেছি। অসুস্থ্যতার কারণে শারিরীক প্ররিশ্রম করতে না পেরে এখন পেয়ারা বিক্রি করে অনেক কষ্ট করেই সংসার চালাতে হচ্ছে। অবশ্য এ জন্য তার কোন দুঃখ নেই। আল্লাহ আমাকে অনেক ভাল রেখেছেন। আমার দুইটা ছেলে। ১১ বছর বয়সের বড় ছেলেটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ছেলেটাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত হয় দুশ্চিন্তা। প্রতিবন্ধী ছেলেটার জন্য যদি সরকারি কোন সহযোগিতা পেতাম তাহলে ছেলেটার জন্য দুশ্চিন্তাটা কমতো।

তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পেয়ারা ঝালমুড়ি বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে তার সংসার চলে কোন মত। আমার পিতার দুই ছেলে মেয়ে। বড় ছেলে আমি। অনেক কষ্টে ছোট বোনটির বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। সবাইকে নিয়ে আল্লাহ্ দিন পার করে নিচ্ছে। তিনি আরোও বলেন পেয়ারা মানব দেহের জন্য খুবি উপকারি আর দামও কম তাই এর চাহিদা আছে। ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে প্রতিদিন পেয়ারা ঝালমুড়ি বিক্রি করে আসছি। প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার থেকে ১৫শ টাকা বিক্রি হয়। বিক্রি ভালো হলে ৩শ থেকে ৪শ টাকা লাভ হয়। শরীর ভাল থাকলে এ পেশাই আঁকড়ে ধরে থাকবেন বলেও জানান তিনি।

 

 

#CBALO / আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com