সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

ইসলামে আত্মহত্যাকারীর ভয়াবহ শাস্তি – মাওলানা: শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২, ২:৫৫ অপরাহ্ণ

ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ হওয়া সত্ত্বেও এমন অনেক লোক আছে, যারা জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য অথবা জেদের বশবর্তী হয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। কিন্তু ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ওপর ভরসা ও দৃঢ় আস্থা থাকলে কারও আত্মহত্যার মতো ক্লেশকর পথে পা বাড়াতে হয় না। আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকতে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আত্মহত্যার পরিণামে কঠোর শাস্তির বর্ণনা দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করব; এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৯-৩০) অথচ আজকাল আত্মহত্যার ঘটনা প্রায়ই সংঘটিত হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এমন প্রবণতা বেশি। বখাটেদের উৎপাতের কারণে কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, আবার মা-বাবার সামান্য বকুনির কারণেও আত্মহননের মতো ঘটনা ঘটছে। পারিবারিক বিপর্যয়, মানসিক অশান্তি, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, মূল্যবোধের অবক্ষয় ইত্যাদি বিষয়ের সঙ্গেও জড়িত আছে আত্মহত্যার মতো ধ্বংসাত্মক ঘটনা। এসব আত্মহত্যার পেছনে কাজ করে প্রচণ্ড মনস্তাত্ত্বিক চাপ। ফলে ভারসাম্য হারিয়ে তা সহ্য করতে না পেরেই আত্মহননের মধ্য দিয়ে দুর্বল চিত্তের ব্যক্তিরা মুক্তি খোঁজে। আত্মহত্যার ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ওইভাবে লাফিয়ে পড়ে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষ পান করে আত্মহত্যা করে, সে-ও জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ওইভাবে নিজ হাতে বিষ পান করতে থাকবে। আর যেকোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করে, তার কাছে জাহান্নামে সেই ধারালো অস্ত্র থাকবে, যা দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেট ফুঁড়তে থাকবে।’ (বুখারি ও মুসলিম) ইসলামি বিধানে আত্মহত্যা নাজায়েজ; এর প্রতিফল চিরস্থায়ী জাহান্নাম। যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, সে শুধু তার নিজের ওপরই জুলুম করে না বরং এতে মা-বাবা, ভাইবোনসহ আত্মীয়-পরিজন সবাই খুব কষ্ট পায় এবং অত্যন্ত বিচলিতবোধ করে। যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে এ এক বিরাট অন্যায়। কারণ, এর দ্বারা আল্লাহর বেঁধে দেওয়া নিয়মের বরখেলাপ হয়ে যায়। তাই এমন কুচিন্তা থেকে সতর্ক থাকা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। নবী করিম (সা.) আত্মহত্যার শাস্তি ঘোষণা করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যেই জিনিস দ্বারা আত্মহত্যা করে, কেয়ামতের দিন তাকে সেই জিনিস দ্বারাই শাস্তি দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে, সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শা ইত্যাদির আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে, সে দোজখেও সেভাবে নিজেকে শাস্তি দেবে।’ (নাসাঈ, তিরমিজি)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর