রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু,ঝালকাঠি:
রাজাপুরে সরকারী এক কর্মচারী ও যুবকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় ২ সাংবাদিকের নামে আক্রোশমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঝালকাঠির রাজাপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উপজেলা কার্যালয়ের সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর কে এম আবুল বাসার ও স্থানীয় যুবক মেহেদী হাসান রুবেল এর মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আবুল বাসার বাদী হয়ে গত রবিবার রাজাপুর থানায় মেহেদী হাসান রুবেলকে প্রধান আসামী করে একটি মামলা (নং-০৩ তাং-০৫.০৭.২০২০) দায়ের করলেও মামলায় তার দুই ছোট ভাই সাংবাদিক আদনান ও মুরাদ-কে আক্রোশ মূলক ভাবে আসামী করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় জড়িত না থাকা সত্বেও দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট মামলা দায়ের করায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কে এম আবুল বাসার গত ৪ জুলাই রাজাপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচীর ত্রুটি সংশোধনের কাজ করছিলেন। বেলা পৌনে ৩ টার দিকে তিনি দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য সাময়িক বিরতি দিলে উক্ত রুবেল তালিকায় তার নাম আছে তাই এখনই সংশোধন করে দিতে হবে বলে দাবী করে। তিনি একটু অপেক্ষা করতে বলতেই উক্ত রুবেল তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালের এক পর্যায়ে একটি লাঠি নিয়ে পেটাতে শুরু করে ও হাতে থাকা সরকারী কাগজপত্র টেনে নিয়ে ছিড়ে ফেলে। তাকে রক্ষা করতে উপজেলা পরিষদের গাড়ী চালক মনির হোসেন এগিয়ে আসলে হামলাকারী রুবেল তাকেও মারধর করে ও খুন-জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়।তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সোহাগ হাওলাদারকে অবহিত করে বিকাল পৌনে ৪টায় গাড়ী চালক মনির হোসেনের সাথে নিয়ে চিকিৎসা করাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে পথিমধ্যে রাজাপুর পুরাতন জেলখানার সম্মুখ রুবেল ও তার ভাই আদনানা, মুরাদসহ অজ্ঞাত ৩/৪জনকে নিয়ে পথরোধ করে পুনরায় মারধর করে ও রুবেল তার পকেট থেকে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করে।
এ বিষয়ে মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর কে এম আবুল বাসারের কাছে জানাতে চাইলে এজাহারের অভিযোগ পুন:ব্যক্ত করে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার নিজে পুলিশ ফোর্স নিয়ে রুবেলের বাসায় তল্লাশী করতে গেলে আদনান-মুরাদ তাদের বাসায় অবৈধভাবে তল্লাশী করার হয়েছে বলে ফেসবুকে পোষ্ট দেয় ও সেখানে বিভিন্ন কমেন্টে তারা ডাকাতী মামলা করবে বলেও মন্তব্য করে এটা কি ঠিক। অথচ আমার উপর হামলার কথা কোন সাংবাদিক এক কলম লিখলো না।
এ ব্যাপারে আদনানা-মুরাদের মা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর বড় ছেলে রুবেল তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বহু পূর্ব থেকে আলাদা বসবাস করে। আমি ছোট দুই ছেলে আদনান-মুরাদ কে নিয়ে থাকি, তারা তো ইউনিয়ন পরিষদে কি হয়েছে কিছুই জানে না। কিন্তু ফেসবুকে কিছু লিখে থাকলে সে জন্য অন্যায়ভাবে প্রশাসনের লোকেরা আদনান ও মুরাদের নামে মিথ্যা মামলায় আসামী করবে? আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার নিরপরাধ দুই ছেলেকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ জানাই।
এদিকে ফেসবুক পোষ্ট করা নিয়ে রাজাপুরের সাংবাদিক দুই সহোদরকে সন্ত্রাসী মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজাপুর ও ঝালকাঠির সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। এবং তারা সরকারী দায়িত্ব পালনকালে সরকারী কর্মচারীকে মারধরের নিন্দা ও দোষীদের শাস্তি দাবির পাশাপাশি দুই সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।