পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নে সরকারি সম্পত্তিসহ বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমিতে অবাধে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও ক্যাডারদের বিরুদ্ধে। খনন করা পুকুরের মাটি বিক্রির মহাউৎসবে মেতে উঠেছে তারা। পুকুর খননের সরকারি নেই কোন অনুমোদন। দিন-রাত এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করা হলেও অজানা কারণে এ বিষয়ে কারও কোনো মাথাব্যাথা নেই।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার হান্ডিয়ার ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বাঘলবাড়ি গ্রামে ওবদার পাশে সরকারি ফসলি সম্পত্তিতে এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হান্ডিয়াল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মতিন, প্রভাবশালী মাঠি ব্যাবসায়ি মোঃ সোনাবুল্লা ও মাসুদ তাদের দুই হাতিয়ার মোঃ জহুরুল ইসলাম ও ওসমান গণির সহযোগিতায় এই সরকারি জায়গা খনন করে চড়া দামে মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করছে। সোনাবুল্লা উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘলবাড়ি গ্রামের মোঃ ইমান আলীর ছেলে। জহুরুল ঐ গ্রামের মোজাহার আলীর ছেরে ও ওসমান গণি মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।
পরিচয় গোপন রাখার সর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, সোনাবুল্ল কয়েকজন ইউনিয়ন যুবলীগ ও আওয়ামীলীগ নেতার ছত্রছায়ায় কিছু বেকার ছেলেদের নিয়ে সঙ্গবদ্ধ ভাবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে। এর পর বিভিন্ন অপকর্মসহ নানা অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে হাতিয়ে নিয়েছে অর্থ-করি। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে গুনতে হয়েছে মাসুল। তাই এলাকার কেউ প্রতিবাদ তো দুরের কথা তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহষ পায়না। কেউ মুখ খুললে রাতের আধারে তাকে ভয়ভিতি দেখানো ও তার বিরুদ্ধে তাদের দলের কাউকে দিয়ে মিথ্য মামলায় ফাসানোর একাধিক নজির রয়েছে। এছাড়া সংখা লঘু যুবতীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তারা আরোও বলেন, ফসলি জমির মালিক মাটি কাটার জন্য স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তি করে এই কাজ করছে। মাটি বহনকারী কুত্তা গাড়ির দাপটে রাস্তায় জান চলাচলের অনউপযোগী হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি এসব গাড়ি মাটি বহন করার সময় ধুলাবালিতে চলাচলকারীর শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যা হচ্ছে। এই সব গাড়ির কারণে সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানানোর পর তারা পকুর খনন বন্ধ করে দেন। কিছুদিন পর আবার শুরু হয়। এভাবেই চলছে ফসলি জমিতে পুকুর খনন আর মাটি বিক্রির উৎসব।
মাটি ব্যবসায়ি সোনাবুল্লা বলেন, সরকারি অনোমদন নেই তবে স্থানিয় অফিস গুলো ম্যানেজ করে চালাচ্ছি। স্থানিয় অফিস বলতে কোন কোন অফিস বোঝাচ্ছেন জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর না দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মেনেজের চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) তানজিনা খাতুন বলেন, খোঁজ নিয়ে এখনই লোক পাঠাচ্ছি। আমরা যখনই খবর পাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিচ্ছি। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ শৈকত ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। সরকারি ও ফসলি জমিতে পুকুর খননের সুযোগ নাই। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
#চলনবিলের আলো / আপন