বর্তমান বিশ্বে সমগ্র মানব জাতির জীবন ও সভ্যতার জন্য অত্যন্ত বড় হুমকি হলো ড্রাগ বা মাদকাসক্ত। মাদকাসক্ত একটি অভ্যাসগত রোগ এবং তা ধিরে ধিরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। ড্রাগের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে যায়। ক্রমশ ভোতা হয়ে পড়ে মননশক্তি। ক্ষিধে পায় না,ঘুম হয় না,হাসি কান্নার বোধ থাকে না,ওজন কমে যায় এবং অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ড্রাগ পৃথিবী বিধ্বংসী নিরাময়ের অযোগ্য জীবন হননকারী এইডস রোগ উৎপত্তির অন্যমত প্রধান কারণ। সুন্দর পৃথিবী গড়ার কারিগর,সম্ভবনাময় যুব সম্প্রদায়কে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে এ ড্রাগ। দুনিয়া কাপাঁনো শতাব্দীর ভয়াবহ আতংক ড্রাগের আগ্রাসন কিছুকাল আগেও ছিল উন্নত বিশ্বের মাথা ব্যথার কারণ। কিন্তু মাত্র কয়েক দশকের ব্যবধানে এ রোগটি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। ড্রাগের কারণে আজ বুকফাটা কান্নায় পৃথিবীর আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যায়,আর্ত হাহাকারে রাতের অন্ধকার আরো নিঃসঙ্গ ও বেদনার্থ হয়ে ওঠে,পরিবার গুলোতে আজ অকালে শোকের ছায়া,শ্মশানের হাহাকার। কি সেই ভয়াবহ নেশা যা মায়ের বুক থেকে সন্তানকে ছিনিয়ে নেয় চিরতরে। সন্তানের হাতে খুন হচ্ছে নেশার টাকা যোগাতে ব্যর্থ পিতা। মাদকাসক্ত সন্তানের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে ভাড়া করা খুনী দিয়ে নিজ সন্তানকে খুন করাচ্ছে মা। আজ অধিকাংশ পরিবারেই এক ভয়ংকর আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আজ এমনই এক রুঢ় নিষ্টুর সময়ের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি। শিকার হয়েছি এক গভীর ষড়যন্ত্রের। সাজ্যবাদী দেশ গুলো মুসলিম বিশ্বকে শেষ করে দেয়ার জন্য, মুসলিম বিশ্বের ইসলামী বিপ্লবের অগ্রনায়ক যুব সমাজকে অর্থব বানানোর জন্য পরিকল্পিত ভাবে মুসলিম বিশ্বে ড্রাগের বন্যা বয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে সাজ্যবাদী দেশ ভারত বাংলাদেশের সম্ভবনাময়ী যুব সমাজকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য এবং দেশটাকে তাদের নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার জন্য সীমান্তে অস্ত্র ও ফেনসিডিলের কারখানা খুলেছে শত শত। কালের কন্ঠে প্রকাশিত এক সরেজমিন প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতীয় সীমান্তে সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে শত শত ফেনসিলি ও অস্ত্রের কারখানা গড়ে তুলেছে। আর বাংলাদেশকে ফেনসিডিল, হিন্দী সংস্কৃতি আর অস্ত্রের মাধ্যমে শেষ করে দিতে চায়। তাইতো বিশ্বে ড্রাগ এখন যুদ্ধের রুপ নিয়েছে। যুদ্ধ পৃথিবীকে করেছে ধ্বংসস্তুপে। জীবানু যুদ্ধ, রাসায়নিক যুদ্দের পর এবার ড্রাগ বা নেশার যুদ্ধ। এই নেশাযুদ্ধের কবলে পড়েছে লক্ষ লক্ষ তরুণ। মৃতকল্প করে চলেছে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে। অসার করে দিচ্ছে আমাদের প্ল্যান পরিকল্পনা। যুব সমাজই দেশ ও পৃথিবীর প্রাণ। কিন্তু তারা নেশার ঘোরে ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে। আামাদের ভারত নির্ভর চলচ্চিত্র জগৎও নেশা বা মাদকাসক্ত বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। তাই বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে ড্রাগ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের শহরে,নগরে,গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। মাদক দ্রব্যের ব্যবসা বড়ই লাভের ব্যবসা। তাইতো এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাজনৈতিক দলসমূহের পৃষ্টপোষকতায় অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা, ধ্বংস করছে যুব সমাজকে। সম্প্রতি ইয়াবা নামক যৌন উত্তেজক এক মরন নেশা অভিজাত ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। নিষিদ্ধ করে অভিযান চালিয়েও দমানো যাচ্ছে না। কারণ রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা। থাইল্যান্ডের মতো দেশে ইয়াবা আগ্রাসনকে দমন করার জন্য ৩০০০ ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ার দিতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালিন সরকার। বর্তমানে ইয়াবাসহ সকল প্রকার মাদক দ্রব্যের নিরাপদ ট্রানজিট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ। যা রীতি মত আঁতকে উঠার মতো। ভাবিয়ে তুলেছে দেশের অভিভাবক সহ সচেতন জনসাধারণকে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৫ লক্ষ মাদকাসক্ত লোক বসবাস করে। ধূমপান ও ইয়াবা সেবীসহ এ সংখ্যা আরো কয়েকগুন হতে পারে। এক রির্পোটে জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্তে দুই শতাধিক প্রভাবশালী ইয়াবা ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে। যে সরকার ক্ষমতায় থাকুন না কেন তাদের রয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। অন্য এক রির্পোটে জানা যায়, টেকনাফে চিহিৃত ২০ টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ৩ শতাধিক সদস্য দেশের সর্বত্র পৌঁছে দিচ্ছে ইয়াবা। তালিকাভূক্ত ৯৭ জন গদফাদার নিয়ন্ত্রন করছে এই সিন্টিকেট। তারাই সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে অথবা ম্যানেজ করে নিয়ে আসছে ইয়াবার চালান। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, শুধু ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন ইয়াবার চাহিদা রয়েছে ১৪ লাখ।
#চলনবিলের আলো / আপন