সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

ফজিলতের আয়াত ‘আয়াতুল কুরসি’

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ১:২৫ অপরাহ্ণ

অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পেছনে যা কিছু রয়েছে, সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসি (সিংহাসন) সমস্ত আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

আয়াতুল কুরসিতে মোট ৯টি বাক্য আছে। প্রথম বাক্যের সঙ্গে নবম বাক্য, দ্বিতীয়র সঙ্গে অষ্টম বাক্য, তৃতীয়র সঙ্গে সপ্তম বাক্য ও চতুর্থর সঙ্গে ষষ্ঠ বাক্যের অলৌকিক মিল! বাদ পড়ে শুধু পঞ্চম বাক্য। সেটি মাঝে থেকে কী সুন্দরভাবে তার অর্থ ও অবস্থানকে অর্থবহ করে তোলে।

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়েন, তঁার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। হজরত আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা.) রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসুল (সা.) বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসি।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) একদিন দেখতে পেলেন, এক ব্যক্তি সদকার মাল চুরি করছে। তখন তিনি তার হাত ধরে বললেন, ‘আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।’ তখন আগন্তুক বলে যে সে খুব অভাবী। আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন সকালে রাসুল (সা.)–এর কাছে আসার পর তিনি আবু হুরায়রা (রা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘গতকাল তোমার অপরাধীকে কী করেছ?’ আবু হুরায়রা তখন তাকে ক্ষমা করার কথা বললেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, সে আবার আসবে।’ পরদিন আবু হুরায়রা চোরকে পাকড়াও করলেন আর বললেন, ‘এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।’

এবারও সেই চোর বলে যে সে খুব অভাবী আর তার অনেক প্রয়োজন আর শপথ করে যে আর আসবে না। পরদিন আবারও রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি একই জবাব দেন আর তখন তিনি বলেন, ‘আসলেই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবারও আসবে।’ পরদিন আবারও আবু হুরায়রা (রা.) চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন আর যখন সে আবারও চুরি করতে এল, তখন তিনি তাকে পাকড়াও করলেন আর বললেন, ‘এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।’ চোর যখন দেখল এবার তাকে সত্যিই রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন অবস্থা বেগতিক দেখে সে বলে, ‘আমাকে মাফ করো। আমি তোমাকে এমন কিছু বলে দেব, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন।’ আবু হুরায়রা (রা.) সেটা জানতে চাইলে চোর বলে, ‘যখন ঘুমাতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে, তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন, যে তোমার সঙ্গে থাকবে আর কোনো শয়তান সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ এটা শুনে আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রাসুল (সা.) আবার অপরাধীর কথা জানতে চাইলে তিনি আগের রাতের কথা বললেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্তু সে সত্য বলেছে।’ রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)–কে বললেন, ‘তুমি কি জানো সে কে?’ আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, ‘না’। রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)–কে বললেন, ‘সে হচ্ছে শয়তান।’ [সহিহ বুখারি নম্বর ২৩১১]

তাই প্রতি নামাজ শেষে, ঘুমানোর আগে বেশি বেশি আয়াতুল কুরসি পাঠ করার অভ্যাস করুন।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর