সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

সিংড়ায় বাণিজ্যিক ভাবে কেঁচো সার উৎপাদন করে সফল জেসমিন

মোঃ এনামুল হক বাদশা, সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধিঃ
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর, ২০২১, ৩:০২ অপরাহ্ণ

ছোট বেলা থেকেই জেসমিন আক্তারের স্বপ্ন ছিল উদ্যোক্তা হওয়ায়। একটা কিছু করে সবাইকে চমক লাগিয়ে দিবেন। কিন্তু কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এরই মধ্যে বিয়ে হয় ওছমান গণি নামের এক স্কুল শিক্ষকের সাথে। শুরু হয় সংসার জীবনের ব্যস্ততা। ২ মেয়ে, স্বামী ও সংসার জীবনের ব্যস্ততায় কেটে যায় ২৫ বছর। আবারও ভাবতে থাকে ছোট বেলার সেই উদ্যোক্তা হওয়ায় স্বপ্ন। কলেজ পড়–য়া বড় মেয়ে ফারজানার সাথে দেখতে থাকেন ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের ভিডিও। ইউটিউব দেখেই ঠিক করেন কেচোঁ সার উৎপাদনের উদ্যোক্তা হবেন তিনি। গ্রামের মানুষ কে কি বলবেন এসব না ভেবে স্বামী ওছমান গণির সাথে পরার্মশ করে শুরু করেন কেচোঁ খামার। ঝিনাইদহ থেকে ৪ কেজি কেচোঁ সংগ্রহ করে ৮ থেকে ১০টি মাটির চাড়িতে গবর মিশ্রিত করে ছেড়ে দেন কেচোঁ গুলো।
জেসমিনের এই উদ্যোক্তার কথা জানতে পেরে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা আসেন তার বাড়িতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ৮ ¯ø্যাব বিশিষ্ট আরও একটি কেচোঁ খামার করে দেন তারা। মাত্র ১ বছরের মাথায় সফল উদ্যোক্তার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন জেসমিন। স্থানীয় কৃষকরা কেচোঁ বা ভার্মি কম্পোষ্ট সার কিনতে আসেন তার বাড়িতে। ছোট খামার থেকেই তিনি এখন প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছেন। খামারটি বড় হলে আয়ও অনেক বাড়বে এমনটাই স্বপ্ন জেসমিনের।
কেচোঁ খামারী এই জেসমিনের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার চামারী ইউনিয়নের মহিষমারীর চক বলরামপুরের সোনার মোড় গ্রামে। জেসমিনের দেখা দেখি ওই গ্রামের আফরোজা,সালমা,আরিফা নামের আরও ৪ নারী শুরু করেছেন কেচোঁ খামার। তারা সবাই জেসমিনের পরামর্শ নিয়ে কেচোঁ খামারে কাজ করছেন। জেসমেিনর মত নতুন ওই ৪ নারী উদ্যেক্তাদের চোখে মুখেও সফলতার স্বপ্ন।
কেচোঁ খামারী জেসমিন আক্তার জানান, আমার খামার থেকে কৃষকরা ভার্মি কম্পোষ্ট সার কিনছেন ২০ টাকা কেজি দরে। খামার ছোট হওয়ায় কৃষকদের চাহিদা পুরণ করতে পারছি না। সরকারী বা বেসরকারী ভাবে সহজ কিস্তিতে ঋণ পেলে খামারটি বড় করার স্বপ্ন তার।
জেসমিনের ভার্মি কম্পোষ্ট সারে সুফল পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকরা জানান,বাজারের রাসায়নিক সারের চেয়ে এই সারের দাম একদিকে যেমন কম অন্য দিকে বেশি সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া ভার্মি কম্পোষ্ট সার ব্যবহারে অনেক রোগ বালাইও কমে যাচ্ছে বলে তারা জানান। এসব কারনেই দিন দিন ভার্মি কম্পোষ্ট সারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ মোঃ সেলিম রেজা বলেন, কেচোঁ বা ভার্মি কম্পোষ্ট সারের উদ্যোক্তা জেসমিনের কথা জানতে পেরে আমরা তার বাড়িতে যাই এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় একটি খামার স্থাপন করে দেই। দেশের অনেক জায়গাতেই বাণিজ্যিকভাবে কেচোঁ বা ভার্মি কম্পোষ্ট সার উৎপান শুরু হয়েছে তবে বাণিজ্যিক ভাবে সিংড়াতে জেসমিন আক্তারই প্রথম উদ্যোক্তা। যে কেউ এই উদ্যোগ নিলে আমাদের সঠিক পরার্মশ এবং সহযোগিতা থাকবে। 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর