টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১মাস ৪দিন আটকে রেখে এক স্কুল ছাত্রীকে গণর্ধষণের অভিযোগ উঠেছে। গণধর্ষণের পরে ওই স্কুল ছাত্রীকে ভারত পাচারের উদ্দ্যোগ নেয় একদল পাচারকারী। বিষয়টি বুঝতে ওই ছাত্রী সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে বাড়ি আসতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বললে ছাত্রীর বাবা জুলহাস সেক বাদি হয়ে আল আমিনকে প্রধান আসামী করে ট্রাক চালক মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে রোববার (১৭ অক্টোবর) টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কে তদন্ত ও আগামী ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করে। স্কুল ছাত্রী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে ওই ছাত্রী। মোবাইলের মাধ্যমে তার পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল উপজেলার গৌরিশ্বর গ্রামের আসকরের ছেলে আল আমিনের (২৫) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২১ জুলাই কোরবানীর ঈদের দিন বিকেলে ওই স্কুল ছাত্রী তার মায়ের সাথে নানার বাড়ি যায়। নানা বাড়ি থাকাকালীন সময়ে আল আমিনের কথামত ঘাটাইল উপজেলার চেংটা গ্রামে যায়। আল আমিন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই বাড়িতে রেখে একটানা ২৫ দিন ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট আল আমিন তাকে আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে পাচারকারী চক্রের সদস্য ট্রাক ড্রাইভার মাসুদের ট্রাকে তুলে দেয়।
১৬ আগস্ট ভোরে যশোরের বেনাপোলের একটি ফাঁকা বাড়িতে আটকে রেখে ওই ছাত্রীকে ৩/৪ জন মিলে মেয়েটিকে পালাক্রমে কয়েকদিন গণধর্ষণ করে। ২৪ আগস্ট তাদের আলাপচারিতার এক পর্যায়ে মেয়েটি বুঝতে পারে তাকে ভারতে পাচার করার পরিকল্পনা চলছে। এটি শুনে পরের দিন সে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে ২৫ আগস্ট রাতে ওখান থেকে পালিয়ে রিক্সাযোগে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড আসে এবং সেখান থেকে ২৬ আগস্ট বাড়িতে চলে আসে।
মেয়ের বাবা জুলহাস সেক জানান, আমার মেয়েটি বাড়িতে আসার পর সে শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই এবং বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদেরকে অবহিত করি। পরে আসামীদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে গত ১০ সেপ্টেম্বর ভূঞাপুর থানায় অভিযোগ গ্রহন না করলে আল আমিনকে প্রধান আসামী করে ট্রাক চালক মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করি।
এদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবি আকবর হোসেন রানা জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি উত্তর) টাঙ্গাইলকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আদালত ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার বিষেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, মামলার কপি পেয়েছি।তদন্ত করে সময়মত আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
#চলনবিলের আলো / আপন