বিভাগীয় শহর বরিশাল মহানগর বিএনপির কমিটি গঠণের খবরে গত কয়েকদিন থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ চাঙ্গা ভাবের সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রের আভাস অনুযায়ী চলতি মাসে ঘোষনা আসতে পারে মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি।
তাই স্বাভাবিক কারনেই তুমুল আলোচনা চলছে বিভাগীয় শহর বরিশালে বিএনপির হারানো জৌলুস ফিরিয়ে আনতে কে হচ্ছেন মহানগর বিএনপির ভবিষ্যত কর্নধার। দলের ক্রান্তি লগ্নে কার কাঁধে উঠবে এ দায়িত্ব। দলই বা কার ওপর আস্থা রাখতে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের আভাস এবং বরিশাল বিএনপির নেতাকর্মীদের আলোচনায় আহবায়ক হিসেবে উঠে এসেছে পাঁচজন হেভিওয়েট প্রার্থীর নাম। যারা বর্তমান এবং অতীতেও বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন।
দলের অসংখ্য নেতাকর্মীরা বলেন, কমিটি ঘোষনার প্রসঙ্গ উঠলে আলোচনার টেবিলে বিএনপির একক ও অপ্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী হিসেবে মহানগর বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারের নাম আসে সর্বাগ্রে। কিন্তু এবার পাল্টে যেতে পারে চিরাচরিত চিত্রপট। সবকিছু বিবেচনায় চমক দেখাতে পারে হাইকমান্ড। সেক্ষেত্রে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র আহসান হাবীব কামালকে ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে হারানো রাজ্য। জেলা থেকে টেনে তুলে দেওয়া হতে পারে মহানগর বিএনপির আহবায়কের পদটি।
নেতাকর্মীরা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে। দলের উচিত তাকে প্রাপ্য পদ দিয়ে মূল্যায়িত করার। পদ নিয়ে প্রত্যাশার বিষয়ে আহসান হাবীব কামাল বলেন, ১৯৭৭ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আছি। দলের জন্য দীর্ঘ সময়ে যা করেছি তা তৃণমূল থেকে হাইকমান্ড অবহিত রয়েছেন। তাই নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার প্রয়োজন নেই। আশা করছি দলই আমার কর্মের মূল্যায়ন করবে।
পদ প্রত্যাশার দৌঁড়ে পিছিয়ে নেই বরিশাল বিএনপির সাহসী নেত্রী হিসেবে পরিচিত সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ এ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন। আশির দশক থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা এই নেত্রীকেও পিছিয়ে রাখছে না হাইকমান্ড। ইতোমধ্যে জেলা ও মহানগর কমিটিতে গুরুত্বপূর্ন পদেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। মামলা হামলার শিকার হয়েছেন অসংখ্যবার। তিনিও চান দল তাকে ত্যাগের প্রাপ্য পুরস্কার দিবে। এছাড়া দলে ৩৩ শতাংশ নারীকোটা পূরণের জন্য ইসির কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হলেও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এগিয়ে থাকবেন এ নারী নেত্রী।
পরিচ্ছন্ন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে এ পদের জন্য বেশ জোড়েসোড়ে আলোচনায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি মনিরুজ্জামান ফারুক। কর্মী বান্ধব নেতা হিসেবে দলে তার উজ্জ্বল ভাবমূর্তি রয়েছে। আহবায়ক হিসেবে দল তাকে মনোনয়ন দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তবে সবার থেকে প্রত্যাশার পাল্লাটা একটু বেশীই ভারী বঞ্চিত নেতা এ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুলের। ১৯৭৮ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িয়ে থাকা এ নেতার প্রাপ্তির খাতা শুন্যই বলা চলে। বার বার প্রার্থী হয়েও যুগ্ম সম্পাদক পর্যন্তই থেকেছে তার দলীয় মূল্যায়ন। তারপরেও আসন্ন মহানগর বিএনপির কমিটিতে তার প্রত্যাশাটা বাড়তি কিছু নয় বলেও তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, স্বাভাবিক নিয়মেই যেকোন সময় কমিটি ঘোষনা হতে পারে। দল যদি আমাকে এই পদের যোগ্য মনে করে তাহলে আমার আপত্তি থাকবে না। কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদের বিষয়ে তিনি বলেন, দলের অনেক নেতা আছেন যারা কেন্দ্রীয় পদেও আছেন আবার নিজ নিজ এলাকার গুরুত্বপূর্ন পদে রয়েছেন। সুতরাং এটা কোন বিষয় নয়। আসল কথা হচ্ছে দক্ষতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী দিয়ে দল পরিচালনা করা।