গোপালপুরে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে বন্ধুদের সহায়তায় ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করার অপরাধে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতার কৃতরা- উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের মাদারজানী গ্রামের সেলিম হোসেন সোনার ছেলে সিফাত (১৪), মোন্নাফ মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম রনি (১৪) ও নবগ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে ইমরান (১৩)।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সনাতন ধর্মের ওই ছাত্রীকে স্কুলে যাতায়াতের পথে ওই তিন বন্ধু মিলে বার বার প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো। তাদের প্রস্তাবে সে রাজি না হওয়ায় ২৬ মে রবিউল ও ইমরানের সহায়তায় মেয়েটিকে বাড়ীর পাশে নিয়ে প্রথমবার সিফাত জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ইমরান মোবাইলে ধর্ষণের ছবি তুলে। এরপর ধর্ষিতাকে সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে গত ৭ আগস্ট রাতে পূর্বের কায়দায় সিফাতের উপস্থিতিতে বাড়ীর পাশে নিয়ে ইমরান দ্বিতীয়বার তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় রবিউল ইসলাম রনি ধর্ষণের সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে।
ঘটনাটি জানাজানি হলে আলমনগর ইউনিয়নের মাদারজানী গ্রামের ইউপি সদস্য শেখ ফরিদের বাড়ীতে আপোষ-মিমাংসার জন্য স্থানীয় মাতাব্বর মাজম খা ও লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে কয়েক দফা সালিশি বৈঠক বসে। সেখানে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার প্রাথমিক চেষ্টা চালায়। ইমরান টাকা দিতে অস্বীকার করায় সালিশে তার সাথে ধর্ষিতা মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। অপর দুজন চাহিদামত টাকা বিনিময়ের শর্তে মুক্তি পায়। কিন্তু মেয়েপক্ষ মুসলিম ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে অসম্মতি জানায় এবং চাপের মুখে ভয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে সরেজমিনে ওই গ্রামে যায়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সালিশে উপস্থিত লোকজন পালিয়ে যায়। সংবাদকর্মীরা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন ও থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেন।
গোপালপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, মেয়ের বাবা বাদী হয়ে বুধবার রাতে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছে। রাতেই অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত তিন আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।