চাটমোহর উপজেলায় পান বরজে পচন ও মরে যাওয়ায় চাষীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রথমে পান গাছের গোড়ায় কালচে দাগ হয়ে ধীরে ধীরে পুরো গাছ মরে যাচ্ছে। কোনো ওষুধ প্রয়োগেও কাজ হচ্ছে না। পান বরজে এ রোগের কারণে পানচাষীরা আর্থিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে পান বরজের উপর নির্ভশীল প্রায় শতাধিক কৃষক পরিবার। পানের বরজই তাদের একমাত্র আয়ের উৎস। বাপ-দাদার পেশা আকড়ে ধরে থাকার কারণেই আজ জীবনযুদ্ধে চলছে এ পরিবারগুলো।
স্থানীয়রা জানান, প্রাচীনকাল থেকে এই গ্রামের বাসিন্দারা পানের বরজে পান চাষ করে আসছে। এ অঞ্চলের লোকেরা পানের বরজকে বর বলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পান গ্রামে বড়দের পাশাপাশি নারী ও শিশুরাও পানের বরজে পান গাছের পরিচর্যা ও পান ছিড়তে ব্যস্ত সময় পার করছেন এবং পান পচনে হতাশা হয়ে পড়ছে চাষীরা।
উপজেলার গোপালপুর গ্রামের পানচাষী ছাবের আলী জানান, গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে প্রায় একবিঘা পান বরজ (বর) পচে যায়। এ বছর অনেক কষ্ট করে আবার পান চাষ করেছি। গত কয়েকদিন টানা বৃষ্টি জন্য আবারো পচন ধরছে।
হরিপুর এলাকার নয়ন হোসেন বলেন, অচিরেই পান বরজে পচন ও মরে যাওয়া রোগ নির্মূল করা না গেলে পানচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। একই গ্রামের কামাল হোসেন জানান, গত তিন বছর থেকে এই এলাকায় গোড়া পচা রোগ মহামারি আকার ধারণ করেছে। প্রথমে দু’একটা গাছে পচন ধরে, এক পর্যায়ে পুরো পান বরজ পচন ধরে মরে যায়। এ পান চাষ নিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়েছে।
হাটে আসা পানচাষী কায়সার জানান, বর্তমান সময়ে করোনা কালীন নিত্য পণ্য দ্রব্য মূল্য উর্দ্ধগতি। এছাড়া পান চাষের উপকরণ আগের চেয়ে দাম বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় পানের দাম খুবই কম থাকায় পান চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছে। বাব দাদাদের পেশা ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার এ এ মাসুমবিল্লাহ জানান, চাটমোহর ১৩ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হচ্ছে। রোগাক্রান্ত এলাকাগুলোতে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। উপজেলার সব এলাকাতেই পান বরজে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলার পান বরজের মধ্যে একটি বরজই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিকভাবে তিনি অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।