এম এস শবনম শাহীন:
মহামারি রূপ নেওয়া করোনাভাইরাসের প্রকোপে ঘরবন্দি তারকারা। টানা একমাস শুটিং বন্ধ থাকায় কোথাও নেই নতুন কনটেন্ট। এমন দুর্দিনে বিকল্প উপায় নিয়ে এগিয়ে এসেছেন দেশের প্রথম সারির কয়েকজন টিভি অভিনেতা ও নির্মাতা। এ প্রক্রিয়ায় ‘আয়নাবাজি’ ছবির তিনটি প্রধান চরিত্র নিয়ে একটি সিরিজ নির্মাণ করেছেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা। ঘরে বসেই তারকারা শুটিং করেছেন। এরই মধ্যে শুটিং শেষও হয়েছে। এখন চলছে ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ। এতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাবিলা ও পার্থ বডুয়া। এ সিরিজ নিয়ে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আয়নাবাজির তিনটা চরিত্র নিয়ে অমিতাভ রেজা ছোট ছোট তিনটা পর্ব বানিয়েছে, করোনা থেকে মানুষকে সচেতন করার জন্য।
এরই মধ্যে তিন পর্বেরই শুটিং হয়ে গেছে। এখন চলছে এডিটিংয়ের কাজ। কয়েকদিনের ভিতরে টিজার প্রকাশ করা হবে। এরপরই অনলাইনে ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে এগুলো মুক্তি দেওয়া হবে।’ চঞ্চল চৌধুরী আরও বলেন, ‘অমিতাভ রেজা আমাদের কাছে স্ক্রিপ্ট পাঠিয়েছেন। আমরা যার যার বাসায় শুটিং করে পাঠিয়েছি। যেমন, আমার ক্যামেরা চালিয়েছে আমার ছেলে শুদ্ধ। ওর মা ওকে হেল্প করেছে। আমি অভিনয় করেছি। এরকম প্রত্যেকের বাসায় কারও কারও স্বামী- কারও স্ত্রী বা পরিবারের অন্য কেউ সহযোগিতা করেছে শুটিং করতে। আমরা শুটিং করে ফুটেজটা পাঠিয়েছি অমিতাভ রেজার কাছে। বাকিটা সে সাজিয়েছে।’ জানা গেছে, প্রতিটা পর্ব ৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের হবে। এখানে হাজির হবে আয়নাবাজি সিনেমার চরিত্র ‘আয়না’। ‘হৃদি’ চরিত্রটিতে নাবিলা অভিনয় করেছেন ও ক্রাইম রিপোর্টার সাবের চরিত্রে পার্থ বড়ুয়া অভিনয় করেছেন।
বিকল্প উপায় অভিনয়ের প্রসঙ্গে অমিতাভ রেজা বলেন, ‘সবাই যার যার ঘরে বসে অভিনয় করেছেন। আমি কম্পিউটার প্যানেল নিয়ে নিজ ঘরে বসে শুরু করে দিলাম শুটিং। টিজারে দেখেছেন কীভাবে শুটিং করছি। এটা আসলে বেশ কষ্টসাধ্য একটা প্রক্রিয়া। বাট কিছু তো আর করার নেই।’ জানা গেছে, পরবর্তীতে এটা থেকে যা আয় হবে, সেটা করোনা আক্রান্ত রোগী কিংবা যারা অসহায় দিনযাপন করছেন তাদের সহযোগিতার জন্য ব্যয় করা হবে। একই পথে হেঁটেছেন অভিনেতা আফরান নিশো আর মেহজাবীন চৌধুরী। কাজল আরেফিন অমির চিত্রনাট্য ও নির্দেশনায় যার যার বাসা থেকেই শুটিং করলেন ‘ওয়েটিং’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে। এখন চলছে সম্পাদনার কাজ। এ বিষয়ে নির্মাতা অমি জানান, ‘তিনজন শিল্পীই নিজ নিজ মুঠোফোন দিয়ে নিজের দৃশ্যগুলো এক এক করে শুট করেছেন। যার যার মুঠোফোন থেকে সেই দৃশ্যগুলো সংগ্রহ করে পাঠানো হলো ভিডিও এডিটরের কাছে, যার বাসায় এডিট করার ব্যবস্থা রয়েছে। সিলভার স্ক্রিনের ব্যানারে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটির গল্প এগিয়েছে ফেসবুকে পরিচয় হওয়া দুটো মানুষকে ঘিরে। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দুজনে যেদিন সিদ্ধান্ত নেয় দেখা করার, সেদিনই পুরো শহর লকডাউন!
মূলত এখান থেকেই সরল গল্পটিতে জটিল একটা বাঁক নেয়। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে মেহজাবীন বলেন, ‘এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। এসব টেকনিক্যাল বিষয়ে আমি খুব অনভিজ্ঞ। শট দিতে গিয়ে কতবার যে এনজি হয়েছে। দুদিন ধরে শুট করেছি। সম্পাদনা ও মিউজিক করার পর দেখা যাক কেমন হয়।’ অভিনেতা নিশোর কাছে বিষয়টি ছিল সত্যিকার অর্থেই অ্যাডভেঞ্চার। তিনি বলেন, ‘স্ট্যান্ডে মোবাইল বেঁধে আগে জোন তৈরি করেছি। এরপর ক্যামেরা চালু করে জোনে ঢুকে গেছি। যদিও কাজটি সহজ ছিল না।
যেহেতু ক্যামেরায় কেউ ছিল না, তাই একেকটি দৃশ্য কয়েকবার করতে হয়েছে।’ তবে পরিচালক জানিয়েছেন, এটি একটি পরীক্ষামূলক কাজ। কিছুটা সফল হলে ঈদের আগে আরও কিছু কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি শিগগিরই সিলভার স্ক্রিন নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হবে।