সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
ভাঙ্গুড়ায় রাতের আঁধারে গাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা অভয়নগরে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে মাঠভরা হলুদ, সরিষার ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা; কৃষকের মুখে হাসি সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম  দুর্ভোগে পথচারীরা বাগেরহাটে উন্নত পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ ও ব্যবস্থাপনা শীর্ষক কর্মশালা উদ্ভোধন সাতক্ষীরায় সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলায় ৪ দিন অতিবাহিত,আটক হয়নি সন্ত্রাসী রমজান বাহিনীর প্রধান দৌলতপুরে বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন  অভয়নগরে সাবেক চেয়ারম্যান কামাল গ্রেফতার “ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ এর উদ্যোগে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে হলো ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’”

ধনীদের সম্পদে গরিবের অধিকার-মাওলানা :শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১, ১:১৮ অপরাহ্ণ

সম্পদ আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রয়োজনে সৃষ্টি করেছেন। সম্পদের অফুরন্ত ভাণ্ডার একমাত্র আল্লাহর কাছে রয়েছে। মানুষ তার মেধা, শ্রম ও সময় ব্যয় করে অসীম চাহিদার তুলনায় সীমিত সম্পদ আহরণ করতে পারে। পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাবে আমাদের সমাজের কিছু লোক তার মেধাকে ব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। একচ্ছত্র মালিকানার ফলে সে তার সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে এবং এরা দিন দিন আরো ধনী হতে থাকে। অপর দিকে, সমাজের দুর্বলশ্রেণীর নিম্ন আয়ের লোকজন দরিদ্রতার গ্লানি থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না। দিন-রাত, ঝড়-বৃষ্টি ও তপ্তরোদ উপেক্ষা করে পরিশ্রমের পর ঠিকমতো দু’বেলা খাবার তাদের ভাগ্যে জুটে না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুঁজিপতিরা যাদের শ্রম আর প্রচেষ্টাকে ব্যবহার করে তারা পুঁজিপতি ও বিলিয়নপতি হয়েছেন তাদের অধিকারের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না। নিজের সঞ্চয়ের ভাণ্ডারকে আরো ভারী করার জন্য অধীনস্তদের ওপর শোষণ-নির্যাতন, অশুভ আচরণ করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। আল্লাহ তায়ালা চান ব্যক্তিগত মালিকানা থাকা সত্ত্বেও মানুষ আল্লাহর অনুগ্রহের অকুণ্ঠ স্বীকৃতি দিক এবং এ বিশ্বাস পোষণ করুক যে, এই সম্পদ মহান আল্লাহর অনুগ্রহের দান। আর এই বিশ্বাসের আলোকেই তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম আবর্তিত হোক, আল্লাহর বিধান ও অভিপ্রায় অনুসারে তা উপার্জন ও ব্যয় করুক এটাই আল্লাহর চাওয়া। তাই বিত্তবানদের মনে রাখতে হবে যে, তার উপার্জিত সম্পদে সমাজের আর ১০ জনেরও অধিকার রয়েছে। কারণ, এ সম্পদ উপার্জনে শুধু তার প্রচেষ্টাই যথেষ্ট ছিল না। মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ ও সমাজের অপরাপর মানুষের শ্রমের ফলেই তার এই সম্পদ আহরিত হয়েছে, যা আজ তার নিয়ন্ত্রণে, তার মালিকানাধীন। সম্পদের মালিক হতে পারার কারণে শুধু নিজেই তা ভোগ করবে, অন্যকে কিছুই দেবে না, এই কারুণী মানসিকতা আল্লাহ মোটেও পছন্দ করেন না। আহরিত সম্পদের সুষম বণ্টন হলে সমাজের দরিদ্র মানুষকে দৈন্য ও নিগ্রহিত হতে হবে না, অন্তত নিজের ন্যূনতম প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পারবে। সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে সব মানুষই তার অত্যাবশ্যকীয় চাহিদাগুলো পূরণ করে নিতে পারবে।

ইসলাম দানের অনুপ্রেরণাকে এতটুকু পর্যন্ত প্রসারিত করেছে যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সব সম্পদই আল্লাহর পথে বিলিয়ে দেয়ার প্রতি আল কুরআনে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামকে দান খয়রাত করতে বললে তারা রাসূল সা:-কে প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা কী পরিমাণ দান করব? মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন ‘তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করছে যে, কী পরিমাণ তারা দান করবে? আপনি বলে দিন, প্রয়োজনাতিরিক্ত সবকিছু’ (সূরা বাকারা)। অন্য দিকে, প্রয়োজনকে বল্গাহীন না করে সীমিত পর্যায়ে জীবনযাপন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সম্পদ পুঞ্জীভূত করে রাখা যে সঙ্গত নয়; এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বহু আয়াতে ইঙ্গিত করা হয়েছে। যেমন ইরশাদ হয়েছে ‘আর যারা সোনা-রূপা (ধন-সম্পদ) জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে না, তাদেরকে আপনি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন। কিয়ামতের দিন সেগুলো জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং সেগুলো দিয়ে তাদের মুখমণ্ডল, পার্শ্বদেশ এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে এবং বলা হবে এগুলোই সেই সম্পদ যা তোমরা (জাকাত না দিয়ে) পুঞ্জীভূত করে রেখেছিলে’ (সূরা তাওবা- ৩৪)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে ‘যারা মালকে পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং বার বার গণনা করে, আর মনে করে যে, তার মাল তাকে চিরঞ্জীব করে রাখবে। কখনোই নয়, অবশ্যই তাকে হুতামায় (জাহান্নামে) নিক্ষেপ করা হবে’ (সূরা হুমাজা: ২-৪)। সূরা বাকারার ১৯৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছ-‘আর আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর এবং (মাল জমা করে রেখে) নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ কর না’ (সূরা বাকারা- ১৯৫)।
কুরআনের সূরায়ে তাওবার ৬০ নম্বর আয়াতের ঘোষণা অনুযায়ী মূলত ফকির, মিসকিন, জাকাত সংগ্রহকারী কর্মী, অনুরক্ত ব্যক্তি, কৃতদাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদরত মুজাহিদ, বিপদগ্রস্ত মুসাফির ও নওমুসলিমকে জাকাত দেয়া যাবে। নিকটাত্মীয়, প্রতিবেশী ও গরিব ভদ্রলোক কে যুগচাহিদা ও গুণাগুণ বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাকাত দিতে হবে। কারণ, তারা মানুষের কাছে লজ্জার কারণে হাত পাতবে না। তাদের চিহ্ন দেখে চিনে নিতে হবে যে, তারা গরিব। জাকাত যাকে দেবেন তাকে এমনভাবে দেয়া ভালো যেন সে ব্যবসা ইত্যাদি করতে পারে এবং পরবর্তী বছর সেও জাকাতদাতা হয়ে যায়। ভিক্ষার মতো অল্প অল্প করে জাকাত দিয়ে সমাজ থেকে দারিদ্র্যতা দূর করা যাবে না। 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর