মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

অবশেষে ঘরে ফিরছেন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের  নো ম্যান্স ল্যান্ডে পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন নারী

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০, ৩:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বেলাল হোসাইন,খাগড়াছড়ি:
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্যরেখায় গত ২ এপ্রিল থেকে পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর পরিচয় মেলার পর আজ তিনি বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন। তার নাম শাহনাজ পারভিন। বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার আলগা ইউনিয়নে। করোনা পরীক্ষার পর তাকে আজ সোমবার (৪ মে) ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) হাতে তুলে দিয়েছে বিজিবি। শাহনাজ পারভিনকে এ দুটি সংস্থার কর্মকর্তারা বাড়ি পৌঁছে দেবেন।
এদিন বিকেল ৪টায় রামগড় সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গুইমারা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সেলিম জাহান ও ৪৩ রামগড় বিজিবি জোন কমান্ডার কর্নেল তারিকুল হাকিম রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তাদের কাছে তাকে তুলে দেন। আর শাহনাজকে গ্রহণ করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় কমিটির সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার, ইউনিট অফিসার আবদুল গণি মজুমদার, পারিবারিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন কর্মকর্তা মাহবুবুল হক। এরা তাকে বাড়ি পৌঁছে দেবেন।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় কমিটির সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, বিপদ-আপদে আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস মানুষের জন্য কাজ করে। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগে শাহনাজ পারভিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করা হবে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার পর তার নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় আজ আমরা তাকে গ্রহণ করেছি। আশা রাখি কাল বিকেলের মধ্যে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গত ২রা এপ্রিল সকালে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী (বিএসএফ) মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পুশইনের চেষ্টা রুখে দেয় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এতে বিপদে পড়ে যায় ওই নারী। পরে প্রায় ১৬ দিন ধরে ওই নারী বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত ফেনী নদীর মাঝখানে তথা নোম্যান্সল্যান্ডে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান এবং অমানবিক জীবনযাপন করেন। এ নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাঝে তিন দফায় বৈঠক হলেও আসেনি সমাধান।
সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারী নিজ মুখে তার বাড়ি একবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম থানার দোলবাড়ি এলাকায়, আরেকবার হরিণা এলাকায় বলে জানানোর কারণেই মূলত তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। আবার তিনি তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রইখারচর বলেও জানান। সূত্র জানায়, এরপর মহিলার বক্তব্যের ভিত্তিতে বিজিবি-বিএসএফ ঠিকানাগুলো শনাক্ত করার কাজ শুরু করে।বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে সংবাদ প্রচার হলে বিষয়টি আইসিআরসি ও বিডিআরসিএসের নজরে আসে। বিজিবি-আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস যৌথভাবে কাজ করে ওই নারীর নাম পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এ সময় রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তারা শাহানাজ পারভিনের (মানসিক ভারসাম্যহীন নারী) বড় ভাই ওমর আলী, ছোট ভাই সাহেব আলী ও সাহেবের আলগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিক আলী মণ্ডল, উলিপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল কাদেরের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কাছে শাহানাজ পারভিনের ছবি ও ভিডিও পাঠালে তারা তাকে শনাক্ত করেন এবং প্রায় দুই বছর যাবৎ তিনি নিখোঁজ বলে জানান। নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে সরিয়ে বাংলাদেশ অংশে আনা হয় এবং তা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে জানানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর