সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

গরমে তাড়াশে বেড়েছে লোভনীয় ফল তাল শ্বাসের কদর

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০, ৬:৩০ অপরাহ্ণ

সিরাজগঞ্জ, তাড়াশ, প্রতিনিধি:

প্রচন্ড এই গরমে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিভিন্ন হাটবাজারে জমে উঠেছে লোভনীয় ফল তালশ্বাসের কদর। সেই সাথে বিক্রির ধুম। স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষের প্রিয় তালশ্বাস।

কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, জৈষ্ট্যের ভ্যাপসা গরমে শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে এ ফলটি। সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় এসময় বিভিন্ন বয়সী, শ্রেণী পেশার মানুষের এ সময়ের পছন্দের ফল তাল শাঁস। এ ফলটির রয়েছে বিভিন্ন রকমের ওষুধি গুনও।

সুত্রমতে, বাংলাদেশের সর্বত্র তালগাছ দেখা যায়। তালগাছ শাখা-প্রশাখা বিহীন একবীজপত্রী উদ্ভিদ। তালগাছ বাড়ির আনাচে-কানাচে, পুকুর পাড়ে, নদীর ধারে, পরিত্যক্ত স্থানে বেশি দেখা যায়। তবে দিনে দিনে বিলুপ্তির পথে তালগাছ। তালগাছ কিন্তু দীর্ঘজীবী। পৃথিবীর বহু দেশে তালগাছ আছে। এই গাছ কমবেশি শতবছর বাঁচে। তালগাছের প্রতিটি অংশই আমাদের প্রয়োজনীয়। পাতায় ঘরের ছাউনি, জ্বালানি, গরমের বন্ধু হাত পাখা, পাতার ডগার আঁশ দিয়ে মাছ ধরার নানা যন্ত্র তৈরির উপকরণের যোগানদার এই তালগাছ। মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানির বিখ্যাত টুপি এই তালের আঁশ দিয়েই তৈরি। তালের ডোঙা বর্ষাকালে গ্রামবাংলার অন্যতম বাহন। তালের রস, তালের গুড়, কচি তালের শাঁস, পাকা তাল, তালের পিঠা, পাকা তালের বিচির শাঁস এরসবই অত্যন্ত মজার ও উপাদেয় খাবার। আর তাল এর দীর্ঘজীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই ফল দেয়।

কলেজছাত্র রফিকুল ইসলাম বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখনো খাওয়া যায়, তখন বাজারে এটি পানি-তাল হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তালশাঁস আবার কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তালকোরা।

যে যেই নামে চিনুক বা জানুক এটি মৌসুমি ফল। মধুমাস জ্যৈষ্ঠতে বিভিন্ন ফলের সঙ্গে এই ফলেরও কদর বাড়ে। খেতে সুস্বাদু ফলটি রাস্তার মোড়ে, ফুটপাতে কিংবা হাট-বাজারে এ সময়টায় দেদার বিক্রি হয়। অনেকে বিক্রির জন্য এই কচি তাল বাজারে তুলেছেন। আর চোখে পড়ে বিক্রেতারা হাঁসুয়া বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাল কেটে তালের শাঁস বের করছে।

উপজেলার সদরের কলেজগেটে তালশ্বাস বিক্রেতা হোসেন আলী জানান, প্রতিটি তাল ১০ থেকে ১২ টাকা বেচাকেনা হয়। প্রতিটি তালের পাইকারি দাম ৪টাকা থেকে ৬ টাকা। সে হিসাবে প্রতি গাছের তাল ১৫শ থেকে ২হাজার টাকা করে বিক্রি হয়।

প্রবীন ব্যক্তি আব্দুস সাত্তার জানান, বাজারে আসা অসংখ্য ফলের চেয়ে তালশাঁসের বৈশিষ্ট্য আলাদা। একটি তালে ২-৩টি বীজ বা আঁটি থাকে। পরিপক্ব হওয়ার আগে সুস্বাদু তালশাঁস তুলতুলে থাকে। মূলত তালের ভেতরে নরম তুলতুলে শাঁসই তালকোরা বা তালশাঁস। এটি ঠান্ডা ও মিষ্টি জাতীয় সুস্বাদু খাবার। সব বয়সের মানুষের কাছে প্রিয়। গরমের দিনে পিপাসা কাতর পথিকের তৃষ্ণা মেটায় তালে শাস। তালের শাস শরীর শীতল করা একটি অতি সু স্বাদু উপকরণ।

তাল বিক্রেতা মহরম আলী বলেন, শিশু  কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবার কাছে প্রিয় তালের শ্বাস। আবার মৌসুমি ফল বলে শখের বশেই অনেকে এটি খায়। দামেও বেশ সস্তা। তাই বাজারে এর কদরও বেশি। পাড়া মহল্লায় ভ্যানে নিয়ে ফেরি করে বিক্রী করেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর