হিজরি সনের অষ্টম মাস শাবান। নানা কারণে মাসটি অত্যন্ত ফজিলত ও তাৎপর্যপূর্ণ। শাবান মাসের আগের মাস অর্থাৎ হিজরি বর্ষপরিক্রমায় সপ্তম মাস হচ্ছে পবিত্র রজব মাস। রাসুল (সা.) রজবের চাঁদ উঠলে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ অর্থাৎ রমজান পর্যন্ত হায়াত দীর্ঘ করে দেয়ার দোয়া রাসুল (সা.) করতেন। এর কারণ হলো যেন আমরা মহান পবিত্র রমজান মাসের ফজিলত লাভে ধন্য হই। এ জন্য পবিত্র রজব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর রমজানের চাঁদ দেখা পর্যন্ত ওই দোয়াটি পড়তে বলা হয়েছে। পবিত্র রমজান মাস যেহেতু বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস, এ জন্য আগে থেকেই এ মাসের ইবাদত-বন্দেগির জন্য প্রস্তুতি নেয়াটাই একজন মুমিনের কর্তব্য। রাসুল (সা.) রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। শাবান মাসে পুরোদমে রমজানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিতেন।
হাদিস দ্বারা জানা যায়, রাসুল (সা.) রমজানে অধিক ইবাদতের জন্য সময়-সুযোগ বের করতেন। মানসিকভাবে তৈরি হতেন। আর এ কারণেই তিনি পবিত্র শাবানের দিন, তারিখ গুরুত্বসহকারে হিসাব রাখতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুল (সা.) পবিত্র শাবানের (দিন, তারিখ হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন যা অন্য কোনো মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। সুতরাং পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের হিসাব রাখাটাই সুন্নত এবং মুমিনদের করণীয়।
পবিত্র শাবান মাসে অধিকহারে নফল রোজা রাখা উত্তম। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত নবী করিম (সা.) শাবান ও রমজান ব্যতীত দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক (নফল) রোজা রাখতে আর দেখিনি। এ মাসের অল্প কিছুদিন ব্যতীত বরং বলতে গেলে সারা মাসটাই তিনি নফল রোজা রাখতেন। পবিত্র শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত, অর্থাৎ ১৫ শাবান রাত হচ্ছে পবিত্র শবেবরাত, ভাগ্য রজনী। এ রাতের অশেষ ফজিলত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। মুমিনদের করণীয় হলো শাবান মাস পুরোটাই ইবাদতে কাটানো; রমজানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা এবং রমজান পর্যন্ত হায়াত লাভের দোয়া করা।
#CBALO/আপন ইসলাম