মহাগ্রন্হ আল -কোরআনের প্রত্যেকটি অক্ষরই সর্বাধিক সম্মান -মর্যাদাপৃর্ণ এবং উচ্চ ফযিলাত সম্পন্ন। কিন্তু সমগ্র কোরআন প্রত্যেক দিন সকলের জন্যে তিলাওয়াত করা সম্ভব হয় না। এ জন্য নবী করীম (সা:) স্বয়ং পবিত্র কোরআনের কোনো কোনো আয়াত এবং সুরার নাম উল্লেখ করে তার ওপর আমল করে উচ্চ ফজিলাত অর্জন করার জন্যে মুসলসানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। যেমন সুরা আলিফ- লাম -মীম সিজদা এবং সুরা মুলক এ দুটো সুরা খুবই ছোট ছোট আয়াতসম্পৃর্ণ সৃরা, যা তিলাওয়াত করতে খুব বেশী সময়ের প্রয়োজন হয় না। আর মুখস্ত করে নিতে পারলে তো খুবই ভালো। এ দুটো সৃরা প্রক্যেক দিন ঘুমানোর পৃর্বে নবী করীম (সা:) স্বয়ং তিলাওয়াত করেছেন এবং অন্যদেরকেও বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন —– کان رسول الله صلی الله علیه وسلم لا ینام حتی یقرا الم السجد ة وتبارک الذی بیدک الملک নবী করীম (সা:) সুরা আলিফ লাম মীম সিজদা ও সুরা মুলক তিলাওয়াত না করা পর্যন্ত ঘুমাতেন না। (জামেউস সগীর হাদীস নং ৪৮৭৩, তিরমিযী হাদীস নং ২৮৯২) আরেক হাদীসে সুরা বনী ইসরাঈল ও সুরা যুমার তিলাওয়াতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুরা মুলক সেই মর্যাদাপৃর্ণ সুরা যা সম্পর্কে নবী করীম (সা:) বলেছেন ‘—-; لوددت انها فی قلب کل انسان من امتی এটা আমার হৃদয়ের আকাঙ্খা যে, এই সুরাটি আমার প্রক্যেক উম্মত হৃদয়ে সংরক্ষণ করুক। অর্থাৎ তিলাওয়াতের জন্য মুখস্হ করুক। (ইবনে খুযাইমা হাদীস নং ১১৬৩ মুস্তাদরাক হাকেম ১ম খন্ড পৃষ্টা -৫৫৬) এ সুরা সম্পর্কে রাসুল (সা:) অন্যত্র বলেছেন মহান আল্লাহর কিতাবে এমন একটি সুরা রয়েছে যার আয়াত সংখ্যা ২৩, এ সুরাটি তিলাওয়াতকারীর জন্যে ঐ পর্যন্ত সুপারিশ করতে থাকবে, যতক্ষণ না তাকে পুরষ্কৃত করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ ২য় খন্ড পৃষ্টা ২৯৯- ৩১১) আরেক হাদীসে বলা হয়েছে —– سورة تبارک هی المانعٰة ۔من عذاب القبر সুরা তাবারাকাল্লাযি অর্থাৎ সুরা মুলক কবরের আযাব প্রতিরোধ করে অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মুলক পাঠ করবে সে ব্যক্তিকে কবরের আযাব থেকে মুক্ত রাখা হবে। (জামেউস সাগীর, লিল আলবানী হাদীস নং ১১৪০) নবী করীম (সা:) ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন সুরা মুলক যেনো তাঁর সকল উম্মত তিলাওয়াত করে সুতরাং আল্লাহর রাসুল (সা:) এর ইচ্ছা পৃরণ করার বিনিময় যে কত বিশাল তা কল্পনা করা যায় না। এ সুরাটি তিলাওয়াত করলে একদিন যেমন নবী করীম (সা:) এর ইচ্ছা পৃরণ করা হয়, তেমনি এ সুরা তিলাওয়াত করার কারনে কবরের আযাব থেকে মুক্ত থাকা যায়। سور ة فی القران خاصمت عن صلحبها حتی ادخلته الحنٰٰة এ সুরাটি কিয়ামতের দিন তার তিলাওয়াতকারীকে জান্নাতে না পৌছানাে পর্যন্ত মহান আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করতেই থাকবে। (জামেউস সগীর হা: ৩৬৪৪) তিরমিযী শরীফে আরেকটি হাদীস এসেছে ; هی ا لمانعٰة هی المنجیه من عذاب القبر এ সুরা টি অর্থাৎ সুরা মুলক যে ব্যক্তি প্রতিদিন পাঠ করবে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের কঠিন আযাব হতে রক্ষা করবেন। (জামিউস সুনান হাদীস নং২৩৬৭)
লেখক : মাওলানা শামীম আহমেদ
কামিল হাদীস বিভাগ ফাস্ট ক্লাস
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা।
আলোচক: বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকা।
CBALO/আপন ইসলাম