চারিদিকে অস্বাস্থ্যকর ও নোংড়া পরিবেশ, পাতিলে কালো পোড়া তেল, কেমিক্যালের রং ও কৃত্তিম ফ্লেবার ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন ধরে তৈরি হচ্ছে বেকারীর বিভিন্ন পণ্য। বিক্রি হচ্ছে ভাঙ্গুড়া বাজার ও এর আশে পাশের দোকান গুলিতে। কিন্তু এমন অবস্থা হলেও দেখার যেন নেই কেউ। মানুষের খাবার এমন পরিবেশেই তৈরি হচ্ছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পৌর সদরের চৌবাড়িয়ার ভদ্রপাড়ার রুনা বেকারীতে। একটি জনবহুল স্থানে এমন মানহীন প্রতিষ্ঠানে কিভাবে এসব পণ্য তৈরি করে তা দীর্ঘদিন বাজারজাত করে আসছে? এ প্রশ্ন অনেকের। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী প্রশাসনের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।
জানা গেছে, বেশিরভাগ শিশুদের পছন্দের খাবারের তালিকায় বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ নানা জাতীয় বেকারির পণ্য রয়েছে। আবার অনেক সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই জাতীয় খাবার বাজার থেকে ক্রয় করে খেয়ে থাকে। প্রতিদিন এর চাহিদাও কম নয়। এছাড়া বাসাবাড়ীতে কিংবা আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে গেলেও বেকারি পণ্য দিয়ে অনেকেই অতিথিদের আপ্যায়ন করে থাকেন।পৌর শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে হরহামেশাই প্রতিদিন পৌঁছে যায় এসব খাদ্যসামগ্রী। ফলে মানুষ নিরাপদ বা স্বাস্থ্যসম্মত মনে করেই এসব খেয়ে থাকেন। কিন্তু এসব বানিজ্যিকভাবে তৈরি ও বিপণণ করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। যা পালন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের ভদ্রপাড়া রোড সংলগ্ন ‘রুনা বেকারি’ নামক একটি কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এসব পণ্য।
সরেজমিন রুনা বেকারীতে গিয়ে দেখা যায় ওই ফ্যাক্টারির অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় ময়লার স্তুপ। স্যাঁতসেঁতে পাকা মেঝে কিন্তু নোংড়া পরিবেশ। ঢেউটিনের একটি ঘরে বড় আকারে চুলা বসিয়ে এসব পণ্য দীর্ঘদিন ধরে তৈরি করা হচ্ছে। ঘরগুলিতে মাকর্শা জাল বিস্তার করেছে, শ্রমিকরা অপরিছন্ন গেøাভস বিহীন হাতে ও স্যন্ডো গেঞ্জি পড়ে দাঁড়িয়ে অপরিছন্ন শরীরে এসব পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত আছেন। পাশে ময়লা স্তুপ ও কেমিক্যাল রং , কৃত্তিম ফ্লেভার ও কালো ময়লাযুক্ত তেল পাশের পাত্রে রাখা আছে। এসময় শ্রমিকরা জানান পাউরুটি, কেক ও বিস্কুটের কালার, গন্ধ আনতে ওই কেমিক্যাল রং ও ফ্লেভারের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।
বেকারির মালিক মোঃ আব্দুর রহিম ভবানিপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। সে দীর্ঘ বছর যাবৎ এভাবেই তৈরী ও বাজারজাত করছেন কেক, পাউরুটি, বিস্কুটসহ নানা বেকারি পণ্য। অস্বাস্থ্যকর, নোংড়া পরিবেশ , কেমিক্যাল রং ও ফ্লেভার ব্যবহার সর্ম্পকে তিনি বলেন, সব ঠিকঠাক মতোই আছে। তবে ময়লা ও নেংড়া জিনিস গুলি ফেলে দেওয়া হবে বলে জানান। বিএসটিআই এর অনুমোদন আছে বলে দাবি করলেও তার স্বপক্ষে কোনো ধরণের কাগজ দেখাতে পারেনি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরফুজ্জামান বলেন, ভাঙ্গুড়াতে যে এমন ধরণের বেকারীর ফ্যাক্টরি আছে তা তিনি এই প্রথম জানলেন। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।
CBALO/আপন ইসলাম