ওবায়দুল কাদের:
স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। ছুটির কয়েকটা দিন বাড়িতে বসে থাকতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময় চিন্তা করতাম পরীক্ষা শেষের দিনগুলো কিভাবে কাটাবো, ইতিমধ্যে তার একটা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে ফেলতাম। বলছি প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে হাই স্কুল লাইফের কথা। খুব ছোটবেলা থেকেই আমাকে জাতীয় দিবসগুলো হৃদয় ভীষণ নাড়া দিত। এই যেমন ১৬ ই ডিসেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারি ২৬ শে মার্চ। এর মধ্যে ১৬ ই ডিসেম্বর টা আমার সবচেয়ে অন্যরকম এক অনুভুতির জায়গা তৈরি করত সমস্ত হৃদয় জুড়ে। অধির আগ্রহ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করতাম। আচ্ছা, স্বাধীনতা কি! মুক্তিযুদ্ধ কি! আর বিজয়ী বাকি! কিভাবে দেশ স্বাধীন হলো, কে এই বিশাল যুদ্ধক্ষেত্রের দিকনির্দেশনা প্রদান করল, ছোট মনে নানা প্রশ্ন এর উত্তর খুঁজতে লাগলো।
পরীক্ষা শেষ, হাতে বেশ কিছুদিন লম্বা সময়, তারপর প্রিয় দিন, এসব মিলিয়ে হৃদেয়র ব্যাকুলতা যেন বেড়েই চলছে। বেশ ঘটা করে স্বাধীনতা বিজয়গাথা কথা শোনার জন্য বিটিভি [তখন মাত্র একটি চ্যানেল ছিল ]এর কাছে বসে থাকতাম। যুদ্ধের নাটক, যুদ্ধের গান, যুদ্ধের কবিতা ,যুদ্ধের ছবি, এগুলো দেখতে দেখতে সব মিলিয়ে নিজেকে কল্পনার জগতে মুক্তিযোদ্ধা তে পরিণত করতাম। হৃদয় কত সাহস কত বল এটি কেবল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এই উপলব্ধি করতে পারে। অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অ্যাসেম্বলি দাঁড়ানো, হাতে হাতে ফুল, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো। আচ্ছা! আমাদের মত কি ফুলেরাও জেনে গেছে, ওরা যে হৃদয়ের সমস্ত অঞ্জলি দিয়ে ফুটে উঠেছে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহে ফুটিয়ে তুলেছে হলুদের সমারোহে । হা ,এটি তাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই এমনটি হয়েছে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতাম। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া প্রার্থনা করা হয়। আর এভাবেই কেটে যায় প্রিয় একটি দিন, প্রিয় একটি সময়। আবারো অপেক্ষা সেই দিনটির প্রতীক্ষায়।
CBALO/আপন ইসলাম