বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৩৬ অপরাহ্ন

ই-পেপার

আগৈলঝাড়ায় শিশুসহ প্রসুতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগে দুই আয়া গ্রেফতার ; অনুমোদনহীন ‘রেড ক্রিসেন্টর’ মাতৃ সদন সীলগালা, নিহতের লাশ মর্গে প্রেরণ

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০, ৫:০৫ অপরাহ্ণ

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ডেলিভারীর সময়ে মা ও শিশু মৃত্যুর ঘটনায় অবেশেষে ‘রেড ক্রিসেন্ট’ মাতৃ সদন ক্লিনিকের দুই আয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নিহত গৃহবধুর স্বামী। ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জনের নির্দেশ। পুলিশের হাতে সোমবার আটক হওয়া ওই ক্লিনিকের আয়া রাফিজা বেগম ও মায়া বেগমকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার সকালে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধুর লাশ মঙ্গলবার সকালে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সরকারী অনুমোদনহীন সেই ক্লিনিক সীলগালা করেছে প্রশাসন।

থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, সন্তান সম্ভবা মা ও তার পেটের শিশু নিহতের ঘটনায় সীমা বেগমের স্বামী মন্টু বাহাদুর বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত দুই আয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন, নং-৩(৯.১১.২০)। ওই মামলায় আটককৃত আয়াদের গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মন্টুর দায়ের করা এজাহারের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, সোমবার সকালে উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের ভ্যান চালক মন্টু বাহাদুরের চতুর্থ সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সীমা বেগমের (৩৫)ডেলিভারীর জন্য পশ্চিম বাগধা রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন ক্লিনিকে নেয় তার স্বামী। সরকারী অনুমোদনহীন ওই কথিত ক্লিনিকটিতে কোন রেজিষ্ট্রার চিকিৎসক ও নার্স না থাকলেও স্থানীয় ফারুক হোসেন মিয়ার স্ত্রী রাফিজা বেগম ও মান্নান খানের স্ত্রী মায়া বেগম সীমা বেগমের ডেলিভারীর দ্বায়িত্ব নেয়। মুলত তারা দুজনেই সেখানে আয়ার কাজ করে আসছিলো।

 

ডেলিভারীর সময়ে সীমা বেগমের মৃত্যু হলেও কৌশলে তারা বিষয়টি সীমার স্বামীর কাছে গোপন রেখে সীমাকে অন্যত্র নিয়ে ডেলিভারী করার কথা জনায়। সীমার স্বামী মন্টু ওই আয়াদের কথায় সীমাকে স্থানীয় ক্লিনিকে নিলে তারা দ্রুত সীমাকে উপজেলা হাসপাতালে নেয়ার কথা জানালে সীমাকে নিয়ে তার স্বামী উপজেলা হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মামুন মোল্লা সীমাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনা শুনে সোমবার হাসপাতালে ছুটে যান তিনিসহ গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দু রব হাওলাদার। পোস্ট মর্টেমের জন্য হাসপাতাল থেকে নিহত সীমার লাশ উদ্ধার করেন তারা।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রব হাওলাদারসহ তিনি ঘটনাস্থল বাগধা গ্রামের নাম সর্বস্ব ওই ক্লিনিকে পরিদর্শনে গিয়ে অভিযুক্ত দুই আয়া রাফিজা বেগম ও মায়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসেন তারা।

এদিকে সোমবার দুপরেই ‘রেড ক্রিসেন্ট’ মাতৃ সদনে গিয়ে সরকারীভাবে ক্লিনিক পরিচালনার কোন কাগজপত্র না পাওয়া এবং সেখানে কোন চিকিৎসক ও পরিচালনা কমিটির উপস্থিতি না পাওয়ায় ইউএইচএএফপিও’ ডা. বখতিয়ার আল মামুনের নির্দেশে নাম সর্বস্ব ওই ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ করে দিয়েছেন স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সুকলাল সিকদার।

এদিকে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের অনুমোদন বিহীন ওই ক্লিনিক কি ভাবে রোগী ভর্তি ও প্রসুতি মায়ের চিকিৎসা দেয় সেই বিষয়ে উপজেলা হাসপাতাল প্রধান ডা. বখতিয়ার আল মামুনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মানোয়ার হোসেন।

তদন্তের নির্দেশনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা হাসপাতাল প্রধান ডা. বখতিয়ার আল মামুন জানান, ওই নির্দেশনায় সাত কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বরঅ হয়েছে। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তার আগেই রিপোর্ট জমা দিবেন জানিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ঘটনাস্থল বাগধা ‘রেড ক্রিসেন্ট’ মাতৃ সদন ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়েছেন।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর