বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ন

ই-পেপার

৩২ বছরেও আধুনিকতার ছোয়া লাগেনি  ঝালকাঠি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০, ৭:২৩ অপরাহ্ণ

রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি:

দেশের সর্বত্র চেহারা অনেক পাল্টে গেছে, রুপান্তরিত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিন্তু কোন পরিবর্তন হয়নি গুরুত্বপূর্ণ ঝালকাঠি বাস ষ্টান্ড। ঝালকাঠি জেলার কৃষ্ণকাঠি এলাকার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি স্থাপনের ৩২ বছরেও আধুনিকতার ছোয়া লাগেনি। দীর্ঘ দিনের অযত্ন অবহেলায় টার্মিনাল চত্বরে সৃষ্ট খানাখন্দে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকে। তাই কাঁদা পানিতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়াও বিশ্রামাগার না থাকায় যাত্রীদের রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে যত্রতত্র দাড়িয়ে থাকতে হয়। পৌরসভার নির্মিত শৌচাগার থাকলেও সামনে পরিবহন কাউন্টার থাকায় দেখা যায়না। এতে যাত্রীসহ এলাকাবাসির যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করায় টার্মিনাল এলাকার পরিবেশ দূর্গন্ধময় হয়ে উঠেছে। দূরপাল্লার পরিহন বাস টার্মিনালে না আসায় মহাসড়কে যাত্রী উঠানামা করায় দূর্ঘটনা বেড়েই চলছে। টার্মিনালে প্রবেশ না করায় পরিবহন বাস থেকে পৌরসভার টোল আদায়ও সম্ভব না হচ্ছেনা। ফলে বাস মালিক সমিতির মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। তাই ঝালকাঠি বাস মিনিবাস মালিক সমিতির একমাত্র দাবি টার্মিনালটির আধুনিকায়ন।

১৯৮৮ সনে ১ একর জায়গায় ঝালকাঠির কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি স্থাপন করা হয়। এরপর এটিকে আধুনিকায়নের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। মালিক সমিতি সূত্রে জানাযায়, ঝালকাঠি থেকে ৮টি রুটে ১১০ টি বাস চলাচল করছে। এছাড়াও ঝালকাঠি থেকে চট্ট্রগ্রাম, রাজশাহী, বরগুনা, পাথরঘাটাসহ দূরযাল্লার পরিবহন বাস চলাচল করছে ঝালকাঠি হয়ে। ঐ সময়ে নির্মিত বাস মালিক সমতির জরাজীর্ণ ভবনটি এখন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মালিক সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে এটি সংস্কার করে ঝুুঁকি নিয়ে এখানে সার্বিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। গত বছর ভবনটির প্লাষ্টার খসে মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আহত হন। পাশেই শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের টয়লেট বাথরুম ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পরেছে অনেক আগেই।

ঝালকাঠি আন্তজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. মজিবুর রহমান জানান, টার্মিনালটি নির্মানের পর থেকেই অরক্ষিত অবস্থায় থাকে। এর চারপাশে নেই কোন বাউন্ডারি দেয়ার বা কাঁটাতারের সীমানা। ফলে প্রায় দিনই রাতে এখানে থাকা গাড়ী থেকে ডিজেল, গিয়ার ওয়েল, টায়ার, অতিরিক্ত টায়ারের রিং চুরি করে নিয়ে যায়। যার খেসারত দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের। আমাদের শ্রমিকদের জন্য নেই কোন বিশ্রামাগার। দূরপাল্লার চালক শ্রমিকরা এ কারনে টার্মিনালে প্রবেশ করেনা। পৌরসভার নির্মিত শৌচাগারটির সামনে পরিবহনের কাউন্টার করায় তা আড়ালে পরে গেছে। তাই এটি কেহই ব্যবহার করতে পারেনা এবং ডাক নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।


ঝালকাঠি বাস মিনি বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার একমাত্র অবেহেলিত ঝালকাঠির বাস টার্মিনাল। আধুনিকতার বিন্দুমাত্র ছোয়া লাগেনি বিগত ৩২ বছরে। এখানে যাত্রীদের জন্য নেই কোন বিশ্রামাগার। ৮৮ সনের নির্মিত মালিক সমিতির অফিস ভবনটিও ব্যবহারের অযোগ্য। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে আমাদের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। খানাখন্দে ভরা এ টার্মিনালে বর্ষার সময় পানি জমে থাকে।

 

দূরপাল্লা পরিবহনের কোন বাস এখানে না আসায় হাইওয়ে যাত্রী উঠা নামা করায় দূর্ঘটনার পাশপাশি ঝুঁকি বেড়েই চলছে। পৌরসভাকে বছরে ১০ লাখ টাকা ইজারা টোল দিলেও পরিবহনের কাছ থেকে তা আদায় করা সম্ভব হচ্ছেনা। হাইওয়ে থেকে টার্মিনাল দূরে থাকায় তারা এখানে না এসে বাহির থেকে চলে যাচ্ছে। তাই আমরা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দ্রুত টার্মিনালটি আধুনিকায়ন করার দাবি জানাচ্ছি। টার্মিনাল আধুনিকায়নের বিষয়ে পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার জানান, অনেক আগেই টার্মিনালটি আধুনিকায়নের জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর