বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২১ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :

চলমান উন্নয়ন কাজে বদলে যাচ্ছে নবাবগঞ্জ আশুড়ার বিল 

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০২০, ১১:২৪ অপরাহ্ণ

মোঃ মামুনুর রশিদ,নবাবগঞ্জ,দিনাজপুরঃ  
প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের লীলাভূমি নবাবগঞ্জ শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান। এই জাতীয় উদ্যানটি ২০১০ সালে শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। উদ্যানটি নবাবগঞ্জের ৫১৭.৬১ হেক্টর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের মূল আকর্ষণ পঞ্চবটীর শালবন এবং শালবনের উত্তর পাশ ঘেষে বিশাল আশুড়ার বিল। এ বিলের আয়তন ২৫১.৭৮ হেক্টর। স্থানীয়রা জানান- এক সময় এ বিলের সাদা শাপলা ও লাল পদ্মের আধিক্য উপভোগ করার মতো ছিল। শীত মৌসুমে অসংখ্য অতিথি পাখি সমাবেত হত। বিলের পাড় থেকে স্বচ্ছ পানির ঝর্ণা বহমান ছিল। বিপুল পরিমাণ দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত এ বিলে। ফলে সরকারী ভাবে আশুড়ার বিলটিকে মৎস্য অভয় অরন্য হিসেবে ঘোষনা করা হয়। এক সময় বিপুল পরিমান মাছ ঐ অভয় অরন্য থেকে উৎপাদন  হত। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী হত।
কিন্তু বিল পাড়ের কতিপয় লোকজন অল্প অল্প বিলের জমি দখল করে ধান চাষ শুরু করে। এক সময় বিলের অনেকটা অংশ তারা দখল করে। বিলে চাষকৃত ধানে কিটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করায় বিলের পানি দুষিত হয়ে বিলের মাছ উৎপাদন ব্যহত হয়। অপর দিকে বিলটি আস্তে আস্তে ভরাট হতে থাকে। বিলুপ্ত হয় শাপলা ও পদ্ম সমাহার। আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলে বিলটি তার সৌন্দর্য্য। বিলের হারানো সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনতে ও বিলটিকে দৃষ্টি নন্দন করতে ২০১৯ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে বিলের পশ্চিম অংশে নির্মাণ করা হয় প্রায় ৯০০ ফিট দীর্ঘ কাঠের সেতু। এর পূর্ব অংশে বিলটির পানি ধরে রাখার জন্য নির্মাণ করা হয় ক্রসড্যাম। ফলে আশুড়ার বিল ও জাতীয় উদ্যানের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। বিলে ও জাতীয় উদ্যানে আসতে শুরু করে হাজার হাজার দর্শনার্থী। পাশাপাশি বিলে উৎপাদন হয় বিপুল পরিমান বিলুপ্তি প্রজাতীর মাছ। উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়- বিপুল পরিমান দর্শনার্থী সুবিধা দিতে আশুড়ার বিলের রাস্তা, বসার স্থান, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও টয়লেট নির্মান করা হয়। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে চলমান নানা ধরনের কার্যক্রম।
কিন্তু চলমান এই কাজকে বাধাগ্রস্থ করতে বিলে ধানচাষকারী অবৈধ দখলদার সোচ্চার হয়। পানি ধরে রাখার জন্য নির্মিত ক্রোস ড্যামের বাধ ভেঙ্গে দেয় তারা। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলাও হয়। কিন্তু এর পরেও থেমে নেই তারা। বিভিন্ন আন্দোলন ও হুমকি ধামকির মাধ্যমে তারা আশুড়ার বিলে ধান চাষের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
নবাবগঞ্জ কেন্দ্রিয় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহাবুব আলম জানান- যারা আশুড়ার বিলে ধান চাষ করছিল। প্রকৃত পক্ষে তাদের বিলে জমিতে কোন প্রকার স্বত্ব সামিত্ব নাই। তারা তাদের অবৈধ দখল ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ভাবে পায়তারা করছে। যা আশুড়ার বিল ও জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। জাতীয় উদ্যান ও আশুড়ার বিলের উন্নয়ন হবে এটা উপজেলা বাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী।
নবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সানাউল্লাহ জানান- নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান ও আশুড়ার বিলে উন্নয়ন এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও প্রাণের দাবী। সম্প্রতি আশুড়ার বিলে ক্রোসড্যাম নির্মাণ ও আকা বাঁকা কাঠের সেতু নির্মাণের মাধ্যমে উপজেলা বাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এতে করে ইতিমধ্যে এলাকার অনেক বেকার যুবকের সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে। আশা করছি আগামীতে আরও অনেকের কর্ম সংস্থান হবে। তিনি বার বার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া আশুড়ার বিলের ক্রোসড্যামের কাঁচা বাধটি কংক্রিটের স্থায়ী বাধ হিসেবে নির্মাণের দাবী জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ নাজমুন নাহার জানান- আশুড়ার বিলের মৎস্য অভয়রন্য টিকিয়ে রাখতে ও বিলের হারানো সৌন্দয্য ফিরে আনতে বিলে পানি ধরে রাখার জন্য ক্রোসড্যাম নির্মান করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলমান কাজ শেষ হলে আশুড়ার বিল প্রাকৃতি সৌন্দের্যের লীলা ভুমিতে পরিনত হবে। পাশাপাশি বিপুল পরিমান মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে বিল পাড়ের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হবে।
CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর