সংবাদ ডেস্ক: সারা দেশে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্যাকেজ অনুমোদন করে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
এই প্যাকেজের আওতায় সারা দেশে ২০২১ সালে দুই হাজার ৬৩৩টি বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদী প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করা হবে, যেখানে চার বছর বা তার অধিক বয়সের শিশুরা পড়ার সুযোগ পাবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের কাছে বৃহস্পতিবার এই প্যাকেজ হস্তান্তর করেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির মধ্যে চার বছরের বেশি শিশুদের শিখন শুরু হয়। তারা বেসরকারি কেজি স্কুলে যায়। এই প্যাকেজ চালুর পর সরকারি স্কুলে এসব বাচ্চা শিখতে পারবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে জাতীয় শিক্ষা নীতির একটি উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য পূরণ হবে।
ছোট বাচ্চারা খেলতে খেলতে শিখবে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের জন্য আলাদা বই নেই। শুধু একটি আঁকিবুকি খাতা এবং শিক্ষকদের জন্য একটি শিক্ষক সহায়িকা রয়েছে। ওই সহায়িকা দেখে শিক্ষকরা পড়াবেন।
২০২১ সালে দুই হাজার ৬৩৩টি বিদ্যালয়ে এবং ২০২২ সালে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক চালু করার জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান এনসিটিবি চেয়ারম্যান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ৫ বছরের বেশি বয়সি শিশুদের জন্য বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখার পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্যাকেজ প্রণয়ন করা হয়েছে।
এ প্যাকেজ অনুযায়ী ২০২১ সালে নির্বাচিত ২ হাজার ৬৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি ৪+ বয়সী শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ২০২২ সালে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে।
মন্ত্রণালয় জানায়, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের একটি গভীর সংযোগ রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ছোট ছোট শিশুদের শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, ভাষাগত ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এছাড়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০-এ ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালুর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮ অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত কর্মপরিকল্পনায় প্রাক-প্রাথমিক স্তর ১ বছর থেকে ২ বছরে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী ৪+ বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়টি অনুমোদন করেছেন।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ২০১০ সালে অন্তর্বর্তীকালীন প্যাকেজের মাধ্যমে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে ৫+ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষক্রমের ভিত্তিতে ২০১৪ সালে ৫+ বয়সী শিশুদের জন্য সারা দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়।
সূত্র : বাংলানিউজ