এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার সাম্প্রতিক ফলাফল দেশের অন্যান্য জেলার মতো পাবনার চাটমোহরেও প্রকাশিত হয়েছে। তবে এই ফলাফলকে কেন্দ্র করে উপজেলায় তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ। কারণ উপজেলার চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একজন শিক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পারেনি। চাটমোহর উপজেলা থেকে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের অধীনে কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও, মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা, পার্শ্বডাঙ্গা মহিউল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, চাটমোহর মহিলা টেকনিক্যাল কলেজ এবং নবাব আউয়াল অলি রামচন্দ্রপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ এই চারটি প্রতিষ্ঠানে পাসের হার ছিল ‘শূন্য’।
ফলাফল বিশ্লেষণ দেখা যায়, চাটমোহর উপজেলায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৩০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দাখিল পরীক্ষায় ৬৮৫ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১৭৮ জন। উপজেলায় ৮টি প্রতিষ্ঠানে এক থেকে দুজন করে শিক্ষার্থী পাশ করলেও শতভাগ শূন্যর কোঠায় রয়েছে মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা ও পার্শ্বডাঙ্গা মহিউল উলুম দাখিল মাদ্রাসা। উপজেলায় মাদ্রাসা বিভাগে পাসের হার ২৫.৯৮%।
উপজেলায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভোকেশনাল পরীক্ষায় ৬৩৫ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও ফেল করেছে অর্ধেক। উপজেলায় এম এ মাহমুদ টেকনিক্যাল স্কুল থেকে মাত্র ২জন পাশ করলেও শতভাগ শূন্যর কোঠায় রয়েছে চাটমোহর মহিলা টেকনিক্যাল কলেজ ও নবাব আউয়াল অলি রামচন্দ্রপুর টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ। উপজেলায় কারিগরি বিভাগে পাসের হার ৫০.৫৫%।
চার বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে না পারায় উপজেলায় শিক্ষা মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে।
এদিকে এ উপজেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৩৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ২৭৪৬ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাশ করেছে ২০৯১ জন। উপজেলায় এ বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৩৫ জন। পাসের হার ৭৬.১৪%।
পরীক্ষার ফলাফলে সফলতার শীর্ষে উপজেলার হরিপুর দুর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৮১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো: শফিউল ইসলাম বলেন, ফলাফলে যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করতে পারেনি তা অত্যন্ত দুঃখজনক। নানা কারণে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে। আমরা আশাবাদী, আগামীতে এ পরিস্থিতি পাল্টাবে।
একদিকে সাফল্য, অন্যদিকে সম্পূর্ণ ব্যর্থতা চাটমোহরের এবারের ফলাফল যেন শিক্ষা ব্যবস্থার দুই বিপরীত চিত্র একসাথে তুলে ধরেছে। এই ব্যবধান কমাতে প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছে শিক্ষানুরাগীরা।