সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :

রামগড়ে এসএসসি: মাদ্রাসার সাফল্য, স্কুলগুলোতে সংকটের ছাপ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫, ৫:৩৫ অপরাহ্ণ

সারা দেশের ন্যায় খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায়ও আজ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফলাফলে দেখা গেছে—কোথাও উজ্জ্বল সাফল্য, কোথাও আবার দেখা দিয়েছে আশঙ্কাজনক পতন। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থার গঠনতান্ত্রিক সমস্যাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

রামগড় গণিয়াতুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা এবছরের ফলাফলে নজরকাড়া সাফল্য দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ শিক্ষাবিভাগে পাসের হার ৯৮.৩৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ অর্জন করেছে ২ জন শিক্ষার্থী। এর চেয়েও বড় সাফল্য এসেছে কারিগরি বিভাগ থেকে। সেখানে ১২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ পাসের হার শতভাগ। উপজেলায় এমন নিখুঁত সাফল্য এবার আর কোনো প্রতিষ্ঠানে দেখা যায়নি।

রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলার অন্যতম পুরনো ও প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত হলেও, এবারের ফলাফলে মধ্যম মানে অবস্থান করেছে। পাসের হার ৭৯.৩৭ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা মনে করছেন, কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক সংকট।

এই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম বলেন, “মাধ্যমিক পর্যায়ে পুরো উপজেলাতেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ না থাকায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়ছে শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ওপর। তারা চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আনতে পারছে না।” তিনি আরও বলেন, শুধু উন্নত পাঠ্যক্রম নয়, একজন নিয়মিত শিক্ষকের দিকনির্দেশনাই একজন শিক্ষার্থীর মানোন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফলাফলের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছে রামগড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির পাসের হার মাত্র ৬১.১৬ শতাংশ। যদিও বিজ্ঞান বিভাগে কিছুটা আশার আলো দেখা গেছে। মোট ১২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে, যার মধ্যে ১০ জন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবং বাকি ২ জন মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে। এত কম পাসের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

রামগড় আইডিয়াল স্কুলে পাশের হার ৬৩ শতাংশ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ১জন।

রামগড় বলিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়েও ফলাফল মিশ্র হয়েছে। পাসের হার ৭১.৮৮ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে এটি গত বছরের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

হেয়াকো বনানী কলেজের অধ্যাপক ফারুকুর রহমান জানান, এই বৈচিত্র্যময় ফলাফল রামগড় উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় গভীর চিন্তার কারণ। বিশেষ করে শিক্ষক সংকট, পাঠদানের মান এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা নিয়ে এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ ফলাফলের আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক তদারকি নিশ্চিত করা ছাড়া এই অবস্থার উত্তরণ সম্ভব নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর