বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭ অপরাহ্ন

ই-পেপার

চাটমোহরে গবাদী পশুর খাদ্যে কচুরী পানা

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২০, ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ

চলনবিলের আলো বার্তাকক্ষ:

পাবনার চাটমোহরের খাল বিল জলাশয়ের পানি কমলেও কমছে না গবাদী পশুর খাদ্য সংকট। বর্ষায় বিলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করার ফলে গোচারণ ভূমি ও ঘাস খেত ডুবে যাওয়ায় গবাদী পশুর খাদ্য সংকট শুরু হয়। এক দিকে খড়ের মূল্য বৃদ্ধি অন্য দিকে চাষ কৃত উন্নত জাতের ঘাস ক্ষতগুলো পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গরু মহিষ, ছাগল, ভেড়া নিয়ে বিপাকে পরেছেন চাটমোহরের পশু মালিকেরা।

গরু মহিষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে বিকল্প হিসেবে পশু মালিকেরা পানিতে ভাসমান কচুরী পানা ও রাস্তার পার্শ্ববর্তী লতা গুল্ম ও গাছের পাতার উপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছেন। এ এলাকার অনেক পশু মালিক অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি গরু মহিষকে এখন এসব খাবার খাওয়াচ্ছেন।

চাটমোহর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাটমোহরে ৩শ ২৮ টি গাভীর খামার, ২৩২টি গরু মোটা তাজাকরণ খামার, ৩৮ টি ছাগলের খামার ও ৩২ টি ভেড়ার খামার রয়েছে। এসব খামারসহ অন্যান্য কৃষকের মিলে মোট ৯৯ হাজার গরু, দুই হাজার ৭শ মহিষ, ১ লাখ ২৪ হাজার ছাগল ও ৪ হাজার ৭শ ভেড়া রয়েছে। চাটমোহর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আমরা কিছু খামারিদের খাদ্য দিয়েছি এবং আরো কিছু খাদ্য দেওয়ার জন্য উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবর প্রস্তাব পাঠাবো।

বৈশাখ জৈষ্ঠ্য মাসে কৃষক বোরো ধান কাটলে বোরো ধানের কিছু খড় পাওয়া গেলেও তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। ভাটি এলাকায় খড়ের দাম অপেক্ষা কৃত বেশি হওয়ায় সেসব এলাকার খড় ব্যবসায়ীরা চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় এসে চড়া দামে বোরো ধানের খড় কিনে নিয়ে যান।
যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের উঁচু অঞ্চল থেকে খড় ব্যবসায়ীরা কিছু খড় কিনে ট্রাক ভাড়া দিয়ে চাটমোহর এলাকায় এনে একটু চড়া দামে বিক্রি করছেন।

বর্তমান এ এলাকায় ছোট বড় প্রকার ভেদে একশ আটি খড় প্রায় ৮শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পশু মালিকেরা চড়া দামে পশুখাদ্য কিনে খাওয়াতে হিম শিম খাচ্ছেন। পশু খাদ্য সংকটে অনেকে পশু পালন ছেড়ে দিচ্ছেন মর্মে খবর পাওয়া যাচ্ছে। চাটমোহর হান্ডিয়ালের পাকপাড়া গ্রামের শামসুল আলম, হাসুপুর গ্রামের আজহার জানান, গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গবাদী পশু পালন করে লাভবান হতে পারছেন না তারা। বাধ্য হয়ে গরুর খাদ্য ব্যয় কমাতে প্রতিদিন কচুরী পানা কেটে খাওয়াচ্ছেন। কচুরীপানা খাওয়ালে অন্যান্য ঘাস কম লাগে, তাই খরচ বাঁচাতে কচুরী পানা কাটছি। বড়বেলাই গ্রামের গোখামারী আবু শাহীন জানান, খড়, খইল, ভুশি, ভুট্টাসহ গরুর প্রায় প্রতিটি খাবারের দামই বেশি। এ অবস্থায় গরু পালন করা আমাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পরেছে, এজন্য গোরুর খামার বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করছি।

একজন ভেটেরেনারী সার্জন জানান, কচুরীপানা গবাদী পশুর আদর্শ খাবার নয়। গবাদী পশুর খাদ্য সংকটের কারণে অনেকে কচুরী পানা, লতা পাতা খাওয়ান। কিন্তু কচুরী পানাতে পানির পরিমান বেশি থাকে। গবাদী পশুকে মাত্রাতিরিক্ত কচুরী পানা খাওয়ালে পাতলা পায়খানা বা বদ হজম হতে পারে।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর