জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এবারের নির্বাচনে ভৌগোলিক এলাকা ধরে আলাদা গ্রুপ করা হয়েছিল। এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ থেকে চারটি দেশের জেতার কথা ছিল। প্রতিযোগিতা ছিল পাঁচটি দেশের মধ্যে। পাকিস্তান, চীন, উজবেকিস্তান, নেপাল ও সৌদি আরব। ভোট হয়েছে গোপন ব্যালটে। মোট ভোট ছিল ১৯৩টি। পাকিস্তান পেয়েছে ১৬৯টি ভোট, উজবেকিস্তান ১৬৪টি, নেপাল ১৫০টি, চীন ১৩৯টি। ৯০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছে সৌদি আরব। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন সদস্যদের কার্যকাল শুরু হবে।
সৌদি আরব ও চীনকে নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলির প্রবল আপত্তি ছিল। সাংবাদিক খাসোগির হত্যা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়েও একাধিক ঘটনার উল্লেখ করে তাদের বক্তব্য ছিল, সৌদি আরবে মানবাধিকার, মেয়েদের অধিকার ও বিরোধের অধিকার রক্ষা করা হয় না। চীনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে।
গত সপ্তাহে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডার মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জোট জানিয়েছিল, পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া, সৌদি আরব, কিউবার যে ট্র্যাক রেকর্ড, তাতে তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হতে পারে না। তাদের সদস্য করা মানে, অগ্নিসংযোগকারীদের আগুন নেভানোর দায়িত্ব দেয়া।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের হার থেকে বোঝা যাচ্ছে, জাতিসংঘে আরো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়া দরকার। আরো প্রার্থী থাকলে চীন, পাকিস্তান, কিউবা, রাশিয়াও হারত। তবে এই দেশগুলো সদস্য হওয়ার পরেও জাতিসংঘের এই সংগঠন মানবাধিকার ভঙ্গের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে এবং অত্যাচারিতদের পক্ষে কথা বলবে।
সৌদি আরব এর আগের বার ১৫২টি ভোট পেয়ে জিতেছিল। এ বার তাদের ভোট অনেকটাই কমেছে। চীন জিতলেও তাদের ভোট ২০ শতাংশ কমেছে। উইঘুর মুসলিমদের প্রতি ব্যবহার ও হংকং-এ বিক্ষোভ দমনের নীতি নেয়ায় সম্প্রতি চীন প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে।
আমেরিকা অবশ্য ২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ ছিল, কাউন্সিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া কাউন্সিলেরও সংস্কার দরকার বলে দাবি করেছিল আমেরিকা।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে।