চীনকে চাপে ফেলতে তাইওয়ানের কাছে অত্যাধুনিক তিনটি অস্ত্র বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ চুক্তি অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসকে একটি অনানুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটি জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে চীনকে ক্ষুব্ধ করে তুলতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র মনে করলেও চীন এখনো তাদের স্বাধীনতা মেনে নেয়নি। বরং তাইওয়ানকে তারা তাদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে এবং বলপ্রয়োগ করে হলেও একদিন অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবে বলে বিশ্বাস করে।
গত সেপ্টেম্বরে রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয় যে চীনকে চাপে ফেলতে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা তাইওয়ানের কাছে বিক্রি করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন । জানা গেছে, তিনটি অস্ত্রের পাশাপাশি আরো চারটি অত্যাধুনিক অস্ত্র বিক্রির চুক্তির অনুমোদনের জন্য শিগগিরই কংগ্রেসে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হবে।
সোমবার এ নিয়ে চীনের দূতাবাস ওয়াশিংটনকে মেইলে একটি বিবৃতি পাঠায়। সেখানে এই অস্ত্র বিক্রি বন্ধ এবং তাইওয়ানের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বন্ধ করে করতে বলা হয়। ওই বিবৃতিতে চীনের দূতাবাসের একজন মুখমাত্র বলেন, চীন ধারাবাহিকভাবে এবং দৃঢ়ভাবে তাইওয়ানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির বিরোধিতা করছে।
সিনেট বৈদেশিক সম্পর্ক এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্যদের অবহিত করা হয়েছে যে, পরিকল্পিত তিনটি অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্তটি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছিল। যা বিদেশী সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির তদারকি করে থাকে।
অনানুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে তাইওয়ানের কাছে বিক্রি করতে যাওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, লকহিড মার্টিন কর্প দ্বারা নির্মিত হাই-মবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হিমারস), এসএলএএম-ইআর নামের বোয়িং নির্মিত নির্মিত দূরপাল্লার এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইল এবং এফ-১৬ বিমানে ব্যবহারযোগ্য এক্সটার্নাল সেন্সর পোডস।
এছাড়া, অন্যান্য যেসব সমর সরঞ্জাম বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বৃহত, পরিশীলিত উভচর ল্যান্ডিং ড্রোন, স্থলভিত্তিক হার্পুন অ্যান্টি শিপ মিসাইল এবং আন্ডারওয়াটার মাইন। এসব অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি এখনো অনুমোদিত হয়নি। তবে শিগগিরই অনুমতি দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টির দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে না জানা পর্যন্ত নীতিগতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র বিক্রয় বা স্থানান্তর নিয়ে মন্তব্য করে না।
সূত্র : রয়টার্স।