নিজস্ব প্রতিনিধি :
১৯৭১ সালে দেশকে স্বাধীন করার জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন ওঁরা। পাকিস্তানের প্রশিক্ষিত সেনার সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু ওঁদের অনেকেই স্বীকৃতিটুকু পাননি। কারও মাথার উপরে একফালি ছাদও নেই। মরার পরে দাফনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়েক হাত জমিও নেই। মুজিববর্ষে সেই অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গোটা দেশে ‘বীর নিবাস’ নামাঙ্কিত ১৬ হাজার বাড়ি তৈরি করা হবে। সেইসঙ্গে একই ডিজাইনে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। খরচ হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম পর্যায়ে ২ হাজার ৯৬১টি বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালেই অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়েছে।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আরও ১৬হাজার বাড়ি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত ‘বীর নিবাস’-এ প্রত্যেকটি বাড়ি হবে একতলা বিশিষ্ট। ৯৮০ বর্গফুটের বাড়িতে থাকবে তিনটি বেডরুম ও একটি ড্রয়িং কাম ডাইনিং রুম। চার ডেসিমেল জমিতে নির্মিত বাড়ি তৈরির খরচ ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। প্রথমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ছিল পাঁচতলা বিশিষ্ট বহুতল বাড়ি নির্মাণ করে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিলি করা হবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সজনিত সমস্যার কথা মাথায় রেখে ওই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম আরিফ-উর রহমান জানিয়েছেন, প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করে অনুমোদনের জন্য শিগগিরই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই এগুলো ৪৯০টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি নির্মাণের পরেই মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র চাওয়া হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘বীর নিবাস’ নির্মাণের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কবরস্থান ও একই নকশায় কবর সংরক্ষণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে স্মার্টকার্ড বা পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। পাশাপাশি অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যাঁরা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত তাঁরা যাতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পান, তার জন্য সব উপজেলা সরকারি হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং বিশেষায়িত হাসপাতালকে বিশেষ নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে।
#CBALO/আপন ইসলাম