শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

নান্দাইলে মাদ্রাসা ছাত্রী পাপিয়া হত্যায় আসামিরা এখনো অধরা, পরিবারের ক্ষোভ

ফরিদ মিয়া, নান্দাইল(ময়মনসিংহ):
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:১১ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে ধর্ষন ও  নির্যাতনে মাদ্রাসা ছাত্রী পাপিয়া হত্যা মামলার আসামিরা এখনো অধরা। এতে ক্ষুব্ধ পাপিয়ার পরিবার। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় নিহতের পরিবার। সব আসামিকে গ্রেপ্তার ও ন্যায়বিচারের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন পাপিয়ার পরিবার। এই মামলায় প্রধান আসামি হোসাইনসহ ধরাছোঁয়ার বাইরে অন্য আসামি। পুলিশ ও  নিহতের পারিবার সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়ার মৃত্যুর পর থেকেই আসামীরা আত্নগোপনে রয়েছেন। মামলা হলেও আসামী ধরার তেমন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মাদ্রাসা ছাত্রী পাপিয়া হত্যার পর এ ঘটনা নিয়ে এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পাপিয়া হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের দাবিতে নান্দাইলে এলাকাবাসী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ৬ জনের নামে একটি নিয়মিত হত্যা মামলা নথিভূক্ত করা হয়েছে। পাপিয়ার পিতা মো. আবুল কালাম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলা নং-০৬ (১২) ২০২৪ ধারা ৩৪১/৩০২/৩৪ পেনাল কোড।
মামলার আসামীরা হলেন,ধর্ষক হোসাইন মিয়া, পিতা হানিফ মিয়া,মাতা  রওশনারা, কচুরী চরপাড়া গ্রামের জজের পাপের পুত্র শাহজাহান মিয়া,মৃত আহাম্মদ হোসেনের পুত্র রতন মিয়া, চরপাড়া বগুরীকান্দা গ্রামের তাজু মিয়ার পুত্র গোলাপ মিয়া।
জানা যায়, উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের মো. আবুল কালামের মেয়ে পাপিয়া আক্তার (১৪) উপজেলার বাকচান্দা ফাজিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। পাশেই স্থানীয় বাকচান্দা আব্দুস সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র কচুরী গ্রামের মো. হানিফ মিয়ার ছেলে হোসাইন (১৯) তাকে প্রেম নিবেদনের পর ব্যর্থ হয়ে গত জুন মাসের এক তারিখে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এ অবস্থায় দীর্ঘ তিন মাসেরও বেশি সময় অজ্ঞাত স্থানে রেখে গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাড়ির সামনে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।
সেখানে গত ১৫ দিন চিকিৎসার সময় বাম চোখ বাঁচাতে ডান চোখটি তুলে ফেলেন চিকিৎসক। কিন্তু অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না করিয়ে পরিবার বাড়িতে নিয়ে আসে। চিকিৎসক সঙ্গে দিয়ে দেন চোখের কর্নিয়া।
পরে চিকিৎসকের পরামর্শমতে ওই চোখের কর্নিয়া নিরাপত্তা ও সতেজ থাকার জন্য বাড়ির ফ্রিজে রাখা হয়। ডাক্তারের পরামর্শে পরিবার অপেক্ষায় ছিল যদি মেয়েটি সুস্থ হয়, তাহলে আহত চোখে কর্নিয়া স্থাপন করা যাবে। কিন্তু সবই ভেস্তে গেল। দীর্ঘ দিন যন্ত্রণার পর গত ১৬ ডিসেম্বর পরপারে চলে যায় পাপিয়া।
পাপিয়ার পিতা আবুল কালাম বলেন, মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত একজন আসামীও ধরতে পারছেনা। আইন কি করতাছে তাতো আমি জানিনা। একজন আসামি ধরলেই আমার ও আমার মেয়ের আত্মার শান্তি পাইবো।
পাপিয়ার মা হাদিছা আক্তার কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহম্মেদ জানান, পাপিয়ার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি । তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর