শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

সরিষা ফুলে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত চৌহালীর কৃষি মাঠ

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:২৭ অপরাহ্ণ
oplus_0

সিরাজগঞ্জ জেলার দক্ষিণ অঞ্চল চৌহালী উপজেলায় ফসলের মাঠ এখন সরিষা ফুলে হলুদ রঙে সেজেছে। সে এক অপরূপ দৃশ্য। চোখ মেললেই মন জুড়িয়ে যায়। পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদ চাদরে মোড়ানো গালিচায়। ফুলে মৌমাছি আর প্রজাপতির নাচে গ্রামীণ জনপদ হয়ে উঠেছে আরো মনোমুগ্ধকর ও মুখরিত। প্রকৃতি যেমন অপরূপ ভাবে সেজেছে, ঠিক সেই মুহুর্তে মেতে উঠেছে পেশাদার মধু সংগ্রহে মৌয়ালরা।
সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এসব জমির পাশে পোষা মৌমাছির শত শত বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছে মৌয়াল। বাক্স থেকে হাজার হাজার মৌমাছি বের হয়ে মধু সংগ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষার ফুলে ফুলে। এই অপরূপ দৃশ্যে যেকোনো প্রকৃতি প্রেমী মানুষকে আকৃষ্ট করবে। এবারও বেশিরভাগ মৌ চাষি এসেছেন সাতক্ষীরা, ফরিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এই সরিষা থেকেই মিলছে খাঁটি তৈল, গরুর স্বাস্থ্যকর খাবার, খৈল, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে সরিষার গাছ। সরিষা চাষে খরচও কম, তাইতো কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় উপজেলা জুড়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ব্যাপকভাবে সরিষা চাষ হয়েছে। মৌমাছি সরিষার ফুলে ফুলে উড়ে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষা ফুলে সহজেই পরাগায়ন ঘটে। সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স স্থাপন করলে, সরিষার ফলন অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ে এবং  মৌচাষিরা মধু আহরণ করেও লাভবান।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার খাষপুখুরিয়া, বাঘুটিয়া, খাষকাউলিয়া, ঘোরজান, উমারপুর, স্থল ও সদিয়াচাদপুর
 সহ বিভিন্ন এলাকায় মৌচাষিরা সরিষাক্ষেতের পাশে মৌ চাষ করছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে আরো সপ্তাহ দু-তিয়েক আগেই। ফুলের মধু আহরণ ও সংগ্রহে নেমেছেন, পেশাদার মৌয়ালারা। তাদের বাক্স থেকে দলে দলে উড়ে যাচ্ছে পোষা মৌমাছি, আর সংগ্রহ করছে মধু। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা ফিরছে বাক্সে রাখা মৌচাকে। সেখানে সংগৃহীত মধু জমা করে আবার ফিরে যাচ্ছে সরিষা ক্ষেতে। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে পুরো জমির পরাগায়নেও সহায়তা করে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রচুর মধু উৎপাদন করে যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরাও বাড়তি ফলনের আশা করছেন। বর্তমানে মৌ চাষে প্রতি বাক্স থেকে সপ্তাহে ৪-৫ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। তবে অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে মধু সংগ্রহ বেশি হয়। ৩০টি বাক্সে ১২০ থেকে ১৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয়, রেহাই পুকুরিয়া উত্তর পারায় মৌচাষে ১৩০টি বাক্স বসানো হয়েছে বলে জানান মোয়ালরা।
খাষপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,মৌ চাষে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যেমন সরিষা উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে অল্প খরচে মৌ চাষে দূর করতে পারে বেকারত্ব।
উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে ২হাজার ৬’শ ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়,যার লক্ষ মাত্রা নিদ্ধারণ করা হয়েছে ৪৪৮০ মেঃটন।
 চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শওকত মেহেদী সেতু বলেন,উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের সরিষা কৃষকরা চাষ করেছে, ফসল ঘরে উঠতে জাত বেদ সময় লাগে ৭৫ থেকে ৯০ দিন, স্থানীয় মৌচাষীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু সংগ্রহ ও চাষে উদ্বুদ্ধকরণ করা হলে অতিরিক্ত অর্থ আসবে বেকারত্ব ঘোচাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর