যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভবদহ সুন্দলীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ পরিবারের মানুষ ২ মাসব্যাপী জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি জীবন নিয়ে অস্বাভাবিক মানবেতর জীবন যাপন অতিবাহিত করছে। অন্যদিকে ওইসব অঞ্চলের মানুষের জীবনে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কিস্তি আদায়ের চাপ মানুষের জীবনে মরার উপরে খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগীরা ঋণের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এনজিও সংস্থা গুলোর ঋণআদায় বন্ধের জন্য পানিতে ডুবে থাকা অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে আবেদনসহ নানামুখী কর্মসূচি পালন করলেও সরকারি ভাবে এ পযন্ত অসহায় মানুষদের প্রতি কোন সদয় দৃষ্টি কেউ দেখায়নি। ফলে ভবদহ, সুন্দলীসহ আশপাশের এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে খুবই মানবেতর জীবন যাপনসহ না খেয়ে দিনযাপন করছে। একাধিক এনজিওর ঋন গ্রহীতারা অভিযোগ করে জানান, আমাদের ঘরবাড়ি সবকিছু পানির মধ্যে ডুবে আছে, ঠিক ভাবে খাবার পাচ্ছি না, কাজকর্ম সবকিছু বন্ধ, রাতে উচুস্থানে ছেলে মেয়ে নিয়ে রাস্তার উপরে ঘুমাতে হচ্ছে। কিন্তু এনজিও সংস্থা গুলোর ঋণের কিস্তির চাপে পড়ে আমাদের বেঁচে থাকাটাও দায় হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন এনজিও কর্মীরা এসে বিভিন্ন হুমকিসহ মামলার ভয় দেখায়, এবং কিস্তির টাকা কোনক্রমেই বন্ধ করা হবেনা কিস্তির টাকা দিতেই হবে। এমনকি এনজিও কর্মীরা এটাও বলেন মানুষ মরলো কি বাঁচল এসব আমাদের দেখার প্রয়োজন নেই, কিস্তির টাকা দিতে হবে। সুন্দলী গ্রামের এক ভুক্তভোগী মনোরঞ্জন ধরের ছেলে নিউটন ধর জানান, আমি নওয়াপাড়া আদ্বদিন এনজিও থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি নিয়মিত কিস্তির টাকা দিয়ে যায়, এখন ঘরবাড়ি সবকিছু পানিতে ডুবে আছে কাজকর্ম নেই, স্ত্রী সন্তানদের খেতেও দিতে পারছিনা এনজিওর কিস্তি অফিসার এসে গালাগালসহ বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে ভয়ে পালিয়ে বেড়ায় কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা। এবিষয়ে স্থানীয় সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য মিনতি বিশ্বাস বলেন, আমাদের অঞ্চলের মানুষের যে করুন অবস্থায় আছে তা আপনাদের বোঝাতে পারবোনা বাড়ির উঠানে গলা পযন্ত পানি ঘুমানোর জাগা নেই, খাবার নেই, মানুষের কষ্ট দেখা যায়না, এর মধ্যে এনজিও গুলোর কিস্তির চাপে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আমরা চায় আগামী তিন থেকে চারমাসের জন্য মাননীয় ডিসি মহোদয় মানবিক মানবতার হাতবাড়িয়ে এনজিও গুলোর কিস্তি আদায় বন্ধে জরুরি নির্দেশনা দিলে এই অঞ্চলের মানুষ একটু বেঁচে থাকবে। এবিষয়ে এনজিও সংস্থা গুলোর ম্যানেজারদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমরাও মানুষের কষ্টে কষ্ট অনুভব করছি। কিন্তু আমরা তো চাকরি করি সরকারি ভাবে কোন আদেশ না পেলে আমরা মানুষের জন্য কিছুই করতে পারছিনা। এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, এব্যাপারে আমি এখনো কিছু বলতে পারবোনা, আমার কাছে ওই এলাকার মানুষ আবেদন নিয়ে আসছিলো সেই আবেদন সমাজ সেবা অফিসারের কাছে দিয়ে দিয়েছি।