সৌদি আরব ঐতিহ্যগতভাবে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। ক্ষমতার চর্চা করার জন্য তারা বিপুল পরিমাণ অর্থও খরচ করে। সেটি হোক ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন, মিশরের সেনা সরকারকে অর্থ সহায়তা অথবা লেবানন, জর্ডান বা তেল রপ্তানীকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের নিয়ন্ত্রণে অঢেল টাকা খরচ করা। সব ক্ষেত্রেই সৌদি আরব নিজেদের আধিপত্য বিস্তার এবং ক্ষমতার লড়াই করে যাচ্ছে। এর জন্য তারা বিভিন্ন দেশে বিশেষ বাহিনী পাঠিয়ে হত্যার মিশনও পরিচালনা করে থাকে।
অন্যদিকে মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র নগরি মক্কা ও মদিনার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সৌদি আরবের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বাড়তি সুবিধা পায় রাজ পরিবার। গোটা মুসলিম বিশ্ব তাদের এক ধরণের শ্রদ্ধার চোখে দেখে। দেশটিতে বিন সালমান অধ্যায় শুরু হওয়ার পর থেকেই পররাষ্ট্রনীতি এবং অভ্যান্তরীণ নানা নীতিতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে শুরু করে।
মার্কিন বিখ্যাত লেখক রোনাল্ড হাববার্ড তার জনপ্রিয় সিরিজ এপনিমাসে দেখিয়েছেন কিভাবে বিন সালমান তার আধিপত্য এবং স্বৈরাচারের রাজত্ব কায়েম করেছেন সৌদি আরবের রাজ পরিবারে।
মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্ম ১৯৮৫ সালের ৩১শে আগস্ট। বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের তৃতীয় স্ত্রী ফাহদা বিনতে ফালাহ বিন সুলতানের সন্তান মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি রাজপরিবারের বেশিরভাগের মতোই তিনি সৌদি আরবেই তার পড়ালেখা শেষ করেছেন। কিং সৌদ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করেন বিন সালমান।
ভাগ্য বিন সালমানের সুপ্রসন্ন। যুবরাজ হওয়া এবং পরবর্তী রাজা হওয়ার পথ সুগম হয়েছে তার বড় দুই ভাইয়ের মৃত্যুর কারণে। একই কারণে তিনি তার বাবার সবচেয়ে আদরের হয়ে উঠেন। এই সুযোগে বিন সালমান রাজ পরিবারে তার অবস্থান পোক্ত করেন।
বিন সালমানের ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান:
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ দেশে এবং বিদেশেও এমবিএস নামে বেশি পরিচিত। ২০১৫ সালের মার্চে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পান এমবিএস। বাদশাহ তার ভাইয়ের ছেলে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে ক্রাউন প্রিন্স পদ থেকে অপরাসরণ করে নিজের ছেলেকে যুবরাজ হিসেবে নিযুক্ত করেন। ফলে এমবিএস হয়ে যান পৃথিবীর সবচেয়ে কম বয়সী (২৯ বছর) প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
বর্তমানে বিন সালমান সৌদি আরবে তার বাবা রাজা সালমানের পরই সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি। ৮৪ বছর বয়সী রাজা সালমানের শারীরিক নানা জটিলতার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিন সালমান সিদ্ধান্ত নেন। এভাবেই ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিন সালমান আধিপত্য বিস্তার লাভ করতে থাকেন।
হাববার্ড, বিন সালমানের ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থানের বিষয়ে নানা কৌশল অবলম্বনের বিষয়ে বর্ণনা করেন। নিয়ম অনুযায়ী রাজ পরিবারের সন্তানরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। বিভিন্ন বাহিনী ও দফতরের দেখা শোনা করেন। কিন্তু বিন সালমান যুবরাজ হওয়ার পর এ নিয়ম ভেঙে দেন। এর জন্য তিনি রাজ পরিবারে অনৈক্যের সৃষ্টি করেন। প্রত্যেককে নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে দেন।
এ সুযোগে একাই দায়িত্ব নিয়ে নেন দেশটির সামরিক বাহিনী, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও তেলের ব্যবসায়ের। তার এমন আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন এমন একজন বড় বোনকে (রাজকুমারি) তিনি আটক করেন অথবা রাজদরবারের কার্যক্রম থেকে দুরে রাখেন। জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান প্রিন্স মুতিব বিন আব্দুল্লাহকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন।
২০১৭ সালের নভেম্বরে বিশ্বের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন সৌদি প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালালকে আটক করেন বিন সালমানের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দেশটিতে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান পরিচালনার নামে তাকে আটক করা হয়। এসময় রাজপরিবারের অন্তত ১৮১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে আটক করে রিয়াদের বিলাসবহুল রাজকীয় রিজ-কার্লটন হোটেলে বন্দী করা হয়। সে সময় অর্থ প্রদানের বিষয়ে আপোষ-রফায় রাষ্ট্রীয় কৌসুলি অনুমোদন দেয়ার পর তাদের অনেককেই মুক্তি দেয়া হয়।
দুর্নীতি বিরোধী এই অভিযানে অন্তত ১০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধার হয় বলে খবর প্রকাশ করে সৌদি রাজ দরবার। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা হাববার্ড তার বইতে উল্লেখ করেন, ‘আটকদের কেউই স্বীকার করেননি যে, তারা কোনো রকম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা কোনো রকম অর্থ রাজপরিবার তাদের কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছে।
অন্যদিকে, রাজ পরিবার থেকে উল্লেখিত অর্থ (১০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) কার কাছ থেকে কত টাকা উদ্ধার হয়েছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। তবে এই ঘটনার পর থেকে বিন সালমানের ক্ষমতা বিপদজনকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
২০১৮ সালে অভিযোগ উঠে, বিন সালমান ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার মাকে বন্দী করেছেন। সে সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হতে থাকে, রহস্যজনকভাবে আড়ালে আছেন সৌদি যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের মা। অভিযোগ উঠে, মোহাম্মদ বিন সালমান তার মাকে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ‘বন্দী’ করে রেখেছেন। মাকে ‘লোকচক্ষুর’ আড়ালে রেখেছেন এবং বাবা সালমানের সঙ্গেও নাকি দেখা করতে দেন না বলেও কারও কারও অভিযোগ।
বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং সামরিক অভিযান:
২০১৫ সালে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর বিন সালমান ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ শুরু করেন। নির্দেশ দেন ইরান সমর্থিত হাউথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের। চূড়ান্ত রূপ নেয় ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ। প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে সমর্থন দেন বিন সালমান। ফলে ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ শুরু করে সৌদি মার্কিন জোটের সবগুলো দেশ। শিয়া হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে থাকে ইরান।
যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই বিন সামলান তৈরি করেন একটি সামরিক জোট। বাংলাদেশসহ অন্তত ৩৪টি মুসলিম দেশ নিয়ে এ জোট গঠন করেন। সৌদি রাজধানী রিয়াদ থেকেই জোট বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যদিও পরবর্তিতে কয়েকটি দেশ ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের প্রতিবাদে এই জোটে সেনা না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
লেবাননের ততকালীন (২০১৭) প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরি দেশ থেকে উড়োজাহাজে চড়ে বহুদিনের মিত্র সৌদি আরবে যান। তাকে জানানো হয়নি কোনো রাষ্ঠীয় অভ্যর্থনা। বিমানবন্দরে নামার পরপরই প্রধানমন্ত্রী সাদের মুঠোফোন নিয়ে নেওয়া হয়। পরদিন সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বিবৃতি মারফত তাঁকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়।
এটি ছিলো দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে দুর্বল করতে সৌদি চেষ্টার অংশ। হিজবুল্লাহ লেবাননের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি ও সেখানকার ক্ষমতাসীন হারিরি সরকারের শরিক। আর হিজবুল্লার সঙ্গ ছাড়তে নারাজ ছিলেন হারিরি। তাই তাকে সরিয়ে তার বড় ভাইকে ক্ষমতায় বসাতে চেয়েছিল সৌদি আরব। সৌদি আরব থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেয়ার পর হারিরি এক সপ্তাহ কেটে গেলেও দেশে ফেরেননি। পরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্র’র হস্তক্ষেপে হারিরি দেশে ফিরে যান এবং পদত্যাগের ঘোষণা প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
গৃহযুদ্ধ কবলিত লিবিয়ায় দুটি সরকারে বিভক্ত হয়ে আছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতিসংঘ স্বীকৃত প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সেরাজ এবং অন্যটি জেনারেল খলিফা হাফতারের বিদ্রোহী বাহিনী। এই হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছেন সৌদি যুবরাজ বিন সালমান। এ কারণে শান্তি ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না লিবিয়ায়।
অভিযোগ রয়েছে, বিন সালমান ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। আর ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্রদের মধ্যে সৌদি আরব অন্যতম হিসেবে পরিচিত।
নজরদারি ও হত্যা:
সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে সৌদিতে শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা শেখ নিমরসহ অন্তত ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি আরব। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে আল কায়েদার হয়ে কয়েক দফা হামলায় জড়িত এ অভিযুক্তদের মধ্যে দেশটির শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা শেখ নিমর আছেন। যদিও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়দা ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য শিয়াদের নিন্দা করে থাকে। ২০১১ থেকে ২০১৩ সালে দেশটিতে শিয়াদের ব্যাপক প্রতিবাদের সময় শতাধিক শিয়াকে আটক করা হয়। এ সময় গুলি ও বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়। তবে শেখ নিমরকে শুধুমাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই ২০১৬ সালে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এই ফাঁসি কার্যকরের পেছনে রয়েছে বিন সালমানের অতি আগ্রহ।
বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর অবৈধভাবে নজরদারি ও সমালোচকদের হত্যার জন্যও কুখ্যাত হয়ে আছেন সৌদি আরবের এই যুবরাজ। বিন সালমান বা এমবিএস-এর দুর্ধর্ষ কাণ্ড হচ্ছে ২০১৮ সালে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে হত্যার ঘটনা। এটি করা হয় মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা জামাল খাশোগির একটি উপ-সম্পাদকীয়কে কেন্দ্র করে। সেখানে তিনি সৌদি রাজ পরিবারের কড়া সমালোচনা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট সরাসরি বিন সালমানকে দায়ি করে। সালমান হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও সৌদি যুবরাজ হিসেবে হত্যার দায় তার ওপরই বর্তায় বলে মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি কেউ সৌদি সরকারের সমালোচনা করলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নামে একদল সাইবার সেনা। সেই সমালোচককে জাতীয় ‘বেইমান’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালানো হয়। সালমানের অতি জাতীয়তাবাদীর কারণেই এই সাইবার সেনাদলের উত্থান ঘটে। তবে সৌদি আরবে তথাকথিত সাইবার মাছি হিসেবে রাষ্ট্রীয় নীতির পক্ষের কাজ করার কথা বলে সৌদি শাসকদের ছবি ব্যবহার করে থাকেন। এ সাইবার সেনাদল এখন দ্রুত ক্ষমতাশালী শক্তি হয়ে উঠছে বলে জানা গেছে। সেনাদলের বিভিন্ন পোস্টে সৌদির নিরাপত্তা সংস্থাকেও ট্যাগ করা হয়। একসঙ্গে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার ফলে, তার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ, চাকরিচ্যুতি, এমনকি নিপীড়নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সাইবার সেনাদল।
এদিকে সাংবাদিক জামাল খাশোগির মতো করে একজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ দল পাঠিয়েছেন সৌদি যুবরাজ বিন সালমান। ওই দলের নাম দেয়া হয়েছে টাইগার স্কোয়াড। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই ২০২০) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কানাডার গণমাধ্যম।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সৌদি যুবরাজ বিন সালমান তার দেশের সাবেক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যা করতে চায়। কারণ তিনি দেশটির বিশেষ গোপনীয় তথ্য জানেন। ওই কর্মকর্তার নাম সাদ আল-জাবরি। আল-জাবরি কানাডার টরেন্টতে গত দুই বছর ধরে বসবাস করছেন এবং তিনি কাডানার নাগরিক। সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার এক সপ্তাহের মধ্যে ওই দল কাডায় যায় বলে জানায় বিবিসি।
নারীদের অবাদ স্বাধীনতার ঘোষণা:
বিন সালমান যুবরাজ হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর পরই দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের সঙ্গে ঘোষণা করেন নারীদের অবাদ স্বাধীনতার দেয়ার। দীর্ঘদিন ধরে দেশটির নারীরা কার্যত গৃহবন্দী জীবন যাপন করতেন। সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের দেখা যেত না। এমনকি পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাসা থেকে দূরে কোথাও যেতে পারতেন না তারা। ছিল না গাড়ি চালানোর অনুমতি। বিন সালমান এসব বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেন। অনুমতি দেন নারীদের গাড়ি চালানোর।
২০১৮ সালে সৌদি নারীদের স্টেডিয়ামে গিয়ে ফুটবল খেলা দেখার অনুমতি দেয়া হয়। নারীদের সামরিক বাহিনীতে চাকরির সুযোগ দেন। তবে তাদেরকে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিক হিসেবে পাঠানো হবে না। মেয়েরা সাইকেল রেসেও অংশ নেয়ার অনুমতি পেয়েছে। এতে তিনি বিশ্বজুড়ে বেশ প্রশংসা কুড়ান। জনপ্রিয়তা খানিক বেড়ে যায় দেশের ভেতরে। বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ কর্মসূচীর অধীনে তিনি বেশ কিছু সংস্কার শুরু করেছেন। মেয়েদের ব্যাপারে নেয়া পদক্ষেপগুলো তারই অংশ।
স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট, অনুবাদ: তোফাজ্জল হোসেন।
জন এ্যান্ড্রিউজ: সাবেক সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা দ্যা ইকোনমিস্ট, জন এ্যান্ড্রিউজ-এর উপ-সম্পাদকীয় দ্যা ওয়াল্ড একডিং টু এমবিএস।