পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসারের নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে আটক হলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাঁথিয়া উপজেলা শাখার দাবি করা ভূয়া স্বঘোষিত প্রধান সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের নেতা ইমরান হোসেন শিশির (২৯)।
৩১ আগষ্ট রাতে শিশিরকে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে ৪ জনের নামে মামলা হয়েছে। শিশির উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি কোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মতিন এর ছেলে।
সাঁথিয়া থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাঁথিয়া উপজেলা শাখার ভূয়া স্বঘোষিত সভাপতি ও ছাত্রদলের নেতা শিশির ৩১ আগষ্ট বিকেলে মেয়াদ উত্তীর্ণ কোকাকোলা বিক্রয় অভিযোগ নিয়ে অপর বন্ধু কোনাবাড়িয়া গ্রামের জুয়েলের ছেলে সানীকে (৩০) নিয়ে ধোপাদহ বাজারে মনিরুজ্জামানের দোকানে যায়। মেয়াদ উত্তীর্ণ কোকাকোলা বিক্রয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাদেরকে পাঠিয়েছে বলে জানান।
এ সময় দোকানদারের আরেক ভাই রোকনুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে তারা মোটরসাইকেল যোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসে আসেন। শিশির ও তার বন্ধুরা উপজেলা চত্বরে এসে ইউএনওর কাছে না গিয়ে কৌশলে পরিষদের পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। এসময় কোনাবাড়ীয়া গ্রামের মধুর ছেলে শাকিল (৩২) ও মিলটনের ছেলে তালহা (২৫) কে দেখতে পাওয়া যায়।
তারা দোকানদার মনিরুজ্জামান এর কাছে বলে ইউএনওর কাছে গেয়েছিলাম ইউএনও স্যার তোর ২ লাখ টাকা জরিমানা করবে। এখন তুই কি করবি বল। মনিরুজ্জামান ভয়ে বলেন ভাই আমার কাছে তো অতো টাকা নাই কি করবো আমি? তখন শিশির বলে তুই এক লাখ টাকা দিয়ে চলে যা, তাহলে তোর আরও ১ লাখ টাকা বাঁচবে। ইউএনও আসলে কিন্তু তোর ২ লাখ টাকাই দিতে হবে। কোন রকমে দোকানদার মনিরুজ্জামান জান বাঁচানোর ভয়ে ৬০ হাজার টাকা যোগার করে তাদের হাতে দিয়ে চলে যায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে আলোচনার প্রেক্ষিতে দোকানদার মনিরুজ্জামান থানায় ও আর্মি ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কেন লিখিত অভিযোগ দিলেন এইজন্য পুনরায় মনিরুজ্জামানকে ভয় ভীতি দেখানোর জন্য শিশির ও ছানি ধোপাদাহ বাজারে যায়। এসময় এলাকাবাসী দোকানদার মনিরুজ্জামানকে ভয় দেখাতে এসেছে টের পেয়ে শিশির কে গণধোলাই দেয়। সানি কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও আর্মি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। পুলিশ চাঁদা নেয়া ৬০ হাজার টাকা থানা পুলিশের কাছে ফেরত দেয়।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, চাঁদার টাকা ফেরত দিয়েছে এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এবং ১ জনকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, আমার নামে চাঁদাবাজি করে সে অবশ্যই এটা জঘন্যতম কাজ করেছে। আমার নামে যদি কেউ চাঁদা দাবি করে তাহলে অবশ্যই কেউ চাঁদা দেবেন না। এবং আমার সাথে যোগাযোগ করবেন আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।