বেলাল হোসাইন,(খাগড়াছড়ি)প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির রামগড়ে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড় কালাডেবার বৈরাগী টিলা এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে লায়লা আক্তার ( ২০)নামে এক গৃহবধু মধ্যরাতে বাবার বাড়িতে নিজ শয়ন কক্ষে আত্মহত্যা করেন। নিহত লায়লা আক্তার একই এলাকার সোনাইআগা ওমান প্রবাসী রমজান আলীর স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,হাফেজ আহমেদের মেয়ে লায়লা আক্তারের সঙ্গে প্রায় দুই বছর পূর্বে একই এলাকার ওমান প্রবাসী রমজান আলীর সাথে বিয়ে হয়।বিয়ের একমাসের মাথায় স্বামী রমজান আলী প্রবাস চলে গেলে নিহত লায়লা আক্তার কিছুদিন পূর্বে থেকে মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন।মানসিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় দুই দিন আগে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন লায়লা আক্তার।আজ শুক্রবার
সকাল ৭টায় নাস্তা নিয়ে লায়লা আক্তারের কক্ষে প্রবেশ করলে তাকে মৃত ঝুলন্ত অবস্থায় তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রাশেদা আক্তার দেখতে পান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রামগড় থানার এস আই মুজিবুর রহমান জানান,প্রাথমিক তদন্তের জন্য রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মোহাম্মদ ফরহাদ,রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান,পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন ঘটনাস্থলে যান। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে মানসিক অবসাদের কারণে এই আত্মহত্যা।তিনি আরো জানান,এই বিষয়ে রামগড় থানায় একটি অপমৃত্যুর
মামলা হয়েছে।রামগড় থানার মামলা নং ০৪। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে গত ৪দিনে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে ৩জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।এ নিয়ে এলাকায় উদ্ধেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।রামগড় উপজেলার বাসিন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী তাওহীদা ফেরদৌস বৃষ্টি জানান,আত্মহত্যা’ নিছক ব্যক্তিগত ঘটনা নয়, এটি একাধারে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা।কেননা, ব্যক্তির এ চরম আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফলে পরিবার থেকে শুরু করে গোটা মানবজাতিই ক্ষতির শিকার হয়ে থাকে। ‘আত্মহত্যা’ বলতে কোনো ব্যক্তির মানসিক অবস্থার সেই পরিণতিকে বোঝায়, যখন ব্যক্তি
নিজের প্রাণকে নিজেই হরণ করে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ‘আত্মহত্যা’ মানসিক ব্যাধি; কিন্তু এ ব্যাধির যেসব আলামতের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে- তাতে আত্মহত্যা কমছে না; বরং দিন দিন বাড়ছে।সামাজিক নৈতিকতার অবক্ষয়,মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যার মত ঘটনা ঘটে থাকে।সঠিক কাউন্সিলিং এবং রোগীর প্রতি পরিবার- সমাজের একটু ভালোবাসা এবং আশ্বাস আত্মহত্যার মত পাপ থেকে ভুক্তভোগী কে দূরে রাখতে পারে।