পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রদল কর্মী শরিফ হোসেন সচিন বিশ্বাস (২৫) হত্যা মামলা দায়ের করার প্রতিবাদে স্থানীয়দের বের করা মিছিলে হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া, গুলি বর্ষণ ও মোটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পাবনা-পাকশী বগা মিয়া সড়কের ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর কড়ইতলা মোড়ে এসব ঘটনা ঘটে। এতে মিছিল আসা স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী সজলের মাথায় পিস্তল দিয়ে আঘাতসহ রক্তাক্ত জখম করে। আর হামলা শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়া মিছিলে আসা বিপুলের দুটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মিভুত করা হয়। বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা যায়, গত ৬ আগষ্ট রাত পনে ১০ টার দিকে উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রুপপুর জিগাতলা এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভির হাসান সুমন গ্রুপের ছাত্রদল কর্মী শরিফ হোসেন সচিন বিশ্বাস নিহত হয়। এই ঘটনায় নিহতের মা শরিফা বেগম বাদী হয়ে গ্রুপিংজনিত রেশারেশির কারণে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৪/৫জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাহাপুর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে নারী পুরুষ সমন্বিতভাবে রূপপুর জিগাতলা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কড়ইতলা মোড়ে যাচ্ছিলেন। পথেমথ্যে রূপপুর গোরস্তান এলাকায় পৌছালে প্রতিপক্ষ মিছিলকে লক্ষ করে গুলি বর্ষণ করে। হামলাকারীরা দুটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগসহ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বহনকৃত অটোরিক্সা ভাংচুর করে। খবর পেয়ে মিছিলকারীদের পক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই সময় কড়ইতলা এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।সাহাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি রাসেল পারভেজ বলেন, গ্রুপিং রাজনীতির কারণে হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সুমন তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করলে তানভীর হাসান সুমনের নেতৃত্বে নবী, রাজন, রুমন ওরফে টুকাই রুমন,পাকা সজিব, রিগ্যান, স্বপন, বাপ্পি, রয়েল, সোহেলসহ আরো ২০/২৫জন আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এই সময় তারা মিছিলকে লক্ষ করে অন্ত ১৫/২০ রাউন্ড গুলি করে। এতে মিছিলে আসা স্বজল, বিপুলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। হামলাকারীরা মিছিলে আসা ব্যক্তিদের দুটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। নিজের নেতৃত্বে জনসাধারণের বিক্ষোভ মিছিলে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সুমন বলেন, হত্যা মামলার আসামীদের প্রকাশ্যে ঝাড়–মিছিল করতে দেখে গ্রামবাসী তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আর মিছিলকারীরা পরে গ্রুপিংজনিত কারণে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে। এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. মেহেদী হাসান বলেন, রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের নেতাকর্মীদের হত্যা মামলায় মিথ্যা আসামী করাটা খুবই নিন্দনীয় ও দূঃখজনক। আবার জনসাধারণের বের করা বিক্ষোভ মিছিলে হামলা ঘটনা আরও বেশি দুঃখজনক। উভয় ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবী করছি। ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মিছিলে হামলার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।