পাবনার ঈশ্বরদীতে বলাৎকার করার সময় বাধা দেওয়ায় শিশু জিহাদ হোসেনকে (৯) গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে আটককৃত আসামি আসিফ আলী। আজ (রবিবার) দুপুরে ঈশ্বরদী থানা মিলনায়তকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী। নিহত জিহাদ হোসেন উপজেলার দাশুড়িয়ার মুনসিদপুর গ্রামের প্রবাসী হাসেম আলীর ছেলে ও দাশুড়িয়া কিন্ডারগার্টেনের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। আর হত্যাকারী আসামি আসিফ একই ইউনিয়নের পাকুড়িয়ার গ্রামের মোহাম্মাদ আলীর ছেলে। এর আগে গত শনিবার সকালে উপজেলার দাশুড়িয়ার মনসিদপুর তেঁতুলতলায় পরিত্যক্ত সিএনবি গোডাউনের ঝোপের মধ্যে প্লাস্টিকের পাটিতে জড়ানো বিবস্ত্র অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, গ্রেফতারকৃত আসিফ আসিফ পেশায় ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টলির চালক। কিন্তু সে মাদকাসক্ত ও বিকৃত যৌন মানসিকতার ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে মাদক সেবনসহ এলাকায় গৃহপালিত পশুর সঙ্গে একাধিকবার বিকৃত যৌন কাজে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সে পাবনা সুগার মিলের গেট সংলগ্ন ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কে মোটর সাইকেল ছিনতাইসহ টেবুনিয়া সোনালি ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ও নৈশপ্রহরী জোড়া হত্যা মামলার আসামী। তিনি গ্রেফতার ঘাতক আসিফের বরাত দিয়ে জানান, শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে হালকা বৃষ্টির মধ্যে তেঁতুলতলার পরিত্যক্ত খাদ্য গুদামের সমবয়সী অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করতে ছিল জিহাদ হোসেন। বৃষ্টিতে ভিজে খেলা না করে বাড়িতে যেতে বলে তার ভাই সুমন হোসেন চলে যায় বাড়িতে। ভাইয়ের নির্দেশে জিহাদ হোসেন সিএনবির গোডাউনের পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরতে ছিল। তখন আসিফ ওই গোডাউনের বারান্দায় বসে ইয়াবা সেবন করতে ছিল। শিশু জিহাদ হোসেনকে একা আসতে দেখে তার বিকৃত যৌন মানসিকতায় শিশুকে ডেকে জোরপুর্বক বিবস্ত্র করে বলাৎকারের চেষ্টা করে। এই সময় শিশুটি জোরালি করলে তাকে গলা টিপে ধরে হত্যা করে ঘাতক আসিফ। সেখানে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের পাটিতে জড়িয়ে শিশুটির মরদেহ নারিকেলের গাছ সংলগ্ন ঝোপে রেখে পালিয়ে যায় ঘাতক আসিফ। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক আসিফকে নাটোরের বড়াইগ্রামের মহাসড়ক থেকে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মনিরুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজাউল ইসলাম রেজাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।