অনলাইন ডেস্ক:
মিশা সওদাগর। সবাই তাকে এই নামে চিনলেও আসল নাম শহীদ হাসান মিশা। চলচ্চিত্রে সাধারণত তিনি খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করে থাকেন। খল চরিত্রে অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১১ সালে ‘বস নাম্বার ওয়ান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ খলচরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
তবে ‘স্বামী কেন আসামী’ সিনেমা দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। এরপরে শুধুই পথ চলা। সিনেমায় এতদিনের পথ চলায় তার জীবনে রয়েছে অনেক স্মৃতি। সম্প্রতি কোরবানির একটি স্মৃতির কথা জানালেন মিশা সওদাগর।
তিনি জানালেন, আমি আগে সবাই মিলে ভাগে কোরবানি দিতাম। একবার ঈদে পেমেন্ট পেলাম ৯৫ হাজার টাকা। এরপর পাঁচ লাখ টাকাও পেয়েছি কিন্তু ঐ ৯৫ হাজার টাকার আনন্দ আজও ভুলতে পারি না। তখন ফরিদী ভাই চার লাখ টাকাও পেমেন্ট পেয়েছেন।
সেবার ভালো পেমেন্ট পেয়ে নিজে একা গরু কোরবানি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ভাবনা অনুযায়ী গরু কিনতে হাটে গেলাম। গিয়ে আমি নিজেই ‘গরু’ হয়ে গেলাম! সবাই চিনে ফেলেছে।
এক পর্যায়ে এতো ভিড় জমে গেল যে সামলানোই মুশকিল। গরু বিক্রেতাদের সমস্যা হচ্ছে। যারা ক্রেতা তারাও বিরক্ত হচ্ছেন। ফলে হাটের ইজারাদাররা আমাকে সরিয়ে নিয়ে গেল। বলল, আপনি স্টেজে বসে থাকুন। আমরা আপনাকে গরু দেখাচ্ছি। এরপর বাজেট শুনে কয়েকটা গরু আমার সামনে নিয়ে এলো। আমি ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনলাম। জীবনের প্রথম নিজের টাকায় গরু কোরবানি দিচ্ছি। মনে হচ্ছিলো আমি কিছু একটা অর্জন করেছি।
কোরবানির দিন বিল্ডিংয়ের অন্যদেরও কয়েকটা গরু বাঁধা। সবাই সকাল থেকে কোরবানি দিচ্ছেন। কিন্তু কসাই আসার পর আমার গরু আর খুঁজে পেলাম না। মন খুব খারাপ হয়ে গেল। জীবনের প্রথম কোরবানি। আর গরুটাই হারিয়ে গেল! এদিক-ওদিক খুঁজি কোথাও নেই। বাসার নিচে তখনো একটি গরু বাঁধা ছিল। যেহেতু সবার কোরবানি দেয়া হয়ে গেছে, ফলে তারা বলল, এই গরুটাই আমার। কিন্তু আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম এমন গরু আমি কিনিনি। তাদের বুঝিয়ে বললাম। কিন্তু সবাই বলল, যেহেতু সবার কোরবানি দেয়া হয়ে গেছে, সুতরাং ধরে নিন এটাই আপনার গরু। হুজুরও বলল, অসুবিধা নেই। আল্লাহর নাম নিয়ে গরু কোরবানি দিলাম।
সত্যি কথা বলতে, গরু কাটা দেখলে আমার ভয় লাগে! তারপরও কোরবানি তো দিতেই হবে। গরু কাটার পর অনেক মাংস হলো। পরে প্রতিবেশী একজন বলল, তাদের গরুর মাংস কম হয়েছে। তারাই ভুল করে আমার গরু কোরবানি দিয়ে ফেলেছে।