আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় উপজেলার পাঁচ নারী কর্মকর্তার কেউই উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি অনুপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা। এতে আলোচনা সভায় এসব কর্মকর্তাদের নিয়ে চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় অফিসের কর্মচারী রামকৃষ্ণ নারী দিবসের কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, কৃষি কর্মকর্তা শারমিন জাহান, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা পাপিয়া হক, উপজেলা প্রকৌশলী আফরোজা পারভীন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানম অনুপস্থিত থাকায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় বক্তারা বলেন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত শতাধিক নারী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জাগাতে এসব উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি ছিল। কিন্তু কোন নারী কর্মকর্তা সহ উপজেলা পরিষদের অধিকাংশ কর্মকর্তা উপস্থিত না হওয়ায় দায়সারা ভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে কোন নারী উদ্যোক্তাকে আমন্ত্রণ না জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের আয়োজনে শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে দশটায় এক শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় শতাধিক নারী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে এসব কর্মসূচিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা ছাড়া কোন কর্মকর্তা উপস্থিত হননি। অথচ এই উপজেলা পরিষদে পাঁচজন নারী কর্মকর্তা সহ ১৭ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন বিভিন্ন দপ্তরে।
মহিলা বিষয়ক অফিসের কর্মচারী রামকৃষ্ণ বলেন, সকল কর্মকর্তাসহ নারী কর্মকর্তাদেরকে অনুষ্ঠানে থাকার জন্য অফিসিয়ালি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারপরেও তারা কেন আসেনি বিষয়টি আমার জানা নাই।
কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা পাপিয়া হক বলেন, আমার এক আত্মীয় অসুস্থ হওয়ায় ভাঙ্গুড়া থেকে চলে এসেছি। তাই উপস্থিত হতে পারিনি।
নারী দিবসের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন জাহান বলেন, ব্যক্তিগত অসুবিধা ছিল। এর ওপর শুক্রবার ছুটির দিন। তাই যাওয়া হয়নি।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিদা পারভিন পাখি বলেন, জাতীয় সকল কর্মসূচিতে সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এরপরেও আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলার সকল নারী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে চরম হতবাক হয়েছি। এটা তাদের দায়িত্বের প্রতি চরম অবহেলা মনে করি। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে এমনটা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আরাফাত হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে নারী কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি দুঃখজনক।