পাবনার ঈশ্বরদীতে লীজের মেয়াদ বাড়ানোর চুক্তিতে গ্রহনকৃত টাকা এক মাস পর কলাচাষীকে ফেরত দিয়েই অবৈধভাবে পরিকল্পিত করে কলাসহ ৯শ গাছ কেটে ফেললেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবার প্রামানিক (৬৫)। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা সাঁড়া ইউনিয়নের ৫ নং ঘাট বড় মসজিদ এলাকায় কলাগাছ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে। এতে কলাচাষী ওই এলাকার মোঃ মনি মন্ডলের লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে কলাগাছ সহ গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের ৫ নং ঘাট এলাকার মৃত আখের আলীর ছেলে স্থানীয় বাইতুল নুর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবার আলী নিজে উপস্থিত থেকে পাঁচজন শ্রমিক দিয়ে কলাগাছগুলো কেটে ফেলছেন। কলাচাষী মোঃ মনি মন্ডলের ছেলে মোঃ রনি হোসেন জানান, রেলওয়ে থেকে আলী আকবারের লীজ নেওয়া দুই বিঘা জমি তার বাবা মনি মন্ডল লীজ (খাসনা) নিয়ে কলাগাছ রোপন করেন। দুই বছর পর পর তারা আলী আকবারকে খাজনার টাকা পরিশোধ করেন। তাদের লীজের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু জমিতে থাকা কয়েক হাজার কলাগাছে কলার থোর এসেছে। এই জন্য নতুন করে জমির মালিক আলী আকবারকে চুক্তিমত টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু চুক্তির টাকা এক মাস পর ফেরত দিয়েই আলী আকবার জমিতে থাকা কলাসহ প্রায় ৯শ কলাগাছ কেটে ফেলেন। এমনকি তার বাবার লাগানো কলাগাছসহ আলী আকবার অন্যের নিকট খাজনা দিয়েছেন। এতে তাদের প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। কলাগাছ কেটে ফেলার বিষয়ে সাঁড়া ৫ নং ঘাট বাইতুল নুর জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবার প্রামানিক জানান, তিনি রেলওয়ের নিকট থেকে বিগত ২০ বছর আগে এক বছরের জন্য কয়েক একর জমি লীজ নেন। সেখান থেকে মনি মন্ডলকে দুই বিঘা জমি কলা চাষের জন্য ২-৩ বছর মেয়াদে লীজ দেন। লীজের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়ায় কলাগাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। অন্যের নিকট খাজনা না দিয়ে নিজেই সবজি চাষ করবেন বলে প্রায় প্রতিটি গাছেই থোরসহ কলা থাকলেও গাছ কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। রেলওয়ে থেকে লীজ নেওয়া বেশ কিছু জমি তিনি অন্যের নিকট পজিশন হিসেবে কয়েক লাখ টাকা বিক্রয় করেছেন বলেও জানান আলী আকবার। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান জানান, রেলওয়ে থেকে লীজ নিয়ে অনেকেই অন্যের নিকট উচ্চ দামে পজিশন হিসেবে বিক্রয় করার খবর আমাদের নিকট রয়েছে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে সঠিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আলী আকবারের নামে কত বছরের জন্য কি পরিমান জমি কবে লীজ দেওয়া হয়েছে তা না দেখে বলা সম্ভব নয়। কলাসহ প্রায় ৯শ কলা গাছ কেটে ফেলার বিষয়ে জানতে ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকারের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।