বেলাল হোসাইন,(খাগড়াছড়ি):
খাগড়াছড়ির জেলার রামগড়ে রাশেদা আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ভোর ৩টার দিকে রামগড় উপজেলার মধ্যম বলিপাড়া গ্রামে এ হত্যাকান্ড ঘটে। পুলিশ এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে তার স্বামী ওমর ফারুককে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোর রাতে ওমর ফারুকের পরিবারের সদস্যরা ডাকাত এসেছে বলে চিৎকার করলে তাদের সহায়তায় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে ঘরের বাইরে ফারুকের স্ত্রী রাশেদা আক্তারের অর্ধ উলঙ্গ গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ এবং বাড়ির সামনে অজ্ঞান অবস্থায় স্বামী ফারুককে পড়ে থাকতে দেখেন।তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে এবং চিকিৎসার জন্য ফারুক কে হাসপাতালে প্রেরণ করে। এদিকে পুলিশ ঘটনার পর পরই হত্যার রহস্য উদঘাটনে শাশুড়ী বিবি জহুরা, দেবর শরিফুল ইসলাম, ননদ আমেনা ও জান্নাতুল কে থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে নিহতের স্বামী ওমর ফারুককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করে পুলিশ।
৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে মধ্যম পাড়ার ফল ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের সাথে একই উপজেলার উত্তর লামকু পাড়ার মোহাম্মদ আবু সৈয়দের মেয়ে রাশেদা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের ১৮ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।পারিবারিক কলহে মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করে নিহতের পিতা মোহাম্মদ আবু সৈয়দ জানান, মেয়ের ব্যবহৃত গহনা ও গরু বিক্রি অজুহাতে মেয়ের সঙ্গে স্বামী ও তার পরিবারের দন্ধ চলছিলো। এসব বিষয়ে মেয়েকে মারধর করলে ৩মাস পূর্বে একবার বিচারও হয়েছিলো। সুষ্ঠ ভাবে তদন্ত করলে মেয়ে হত্যার আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তিনি মেয়ে হত্যার জন্য তার মেয়ে জামাতা ও তার পরিবারকে আসামী করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুক জানান,আনুমানিক রাত ৩টাটার দিকে অজ্ঞাত মুখোশধারী চার থেকে পাঁচ জন ব্যাক্তি বাড়িতে ডুকে অতর্কিত ভাবে কুপিয়ে তার স্ত্রীকে খুন করে এবং তাকে মারধোর করে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি কোন রকমে পালিয়ে আসেন।
রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ফরহাদ জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে বহিরাগত সম্পৃক্ততার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে পারিবারিক সংশ্লিষ্টতার বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে। মেয়ের পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তে খাগড়াছড়ি পাঠানো হয়েছে।
রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান জানান,নিহতের পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে তার জামাতা ওমর ফারুককে হাসপাতালে চিকিৎ সাধীন অবস্থায় আটক করেছে রামগড় থানা পুলিশ।তিনি আরো জানান,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন।