শিক্ষা অমূল্য সম্পদ। একটি জাতির বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য শিক্ষার ভূমিকা অপরিহার্য।শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড ও উন্নতির পূর্বশর্ত।মানব দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে মেরুদণ্ড অপরিহার্যতা অপরিসীম। মেরুদণ্ড ছাড়া মানুষ যেমন চলাফেরা করতে পারেনা,তেমনি শিক্ষা ছাড়া একটি জাতি উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করতে পারে না। তাই একটা জাতির প্রথমে প্রয়োজন তার প্রাথমিক শিক্ষার। প্রাথমিক শিক্ষা একটি শিশুর ভবিষৎ তৈরী করে। তৈরী করে একটি জাতির ভবিষ্যৎ। এই কারনেই আজ সারা বিশ্বে প্রাথমিক শিক্ষাকে সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসাবে তুলে ধরা হয়। প্রতিটি শিশুর শিখতে চাওয়ার প্রবনতা, চারিত্রিক গঠন, আচরনিক পরিবর্তন, বিভিন্ন ধরনের মৌলিক শিক্ষাগুলো প্রথমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিখানো হয়। যেটি তার ভবিষ্যতে ভিত্তি হিসেবে কাজ করে থাকে। একজন শিক্ষার্থীর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক,নান্দনিক আধ্যাত্মিক, আবেগিক বিকাশ সাধন এবং তাদের দেশাত্মবোধে বিজ্ঞানমনস্কতায় সৃজনশীল ও উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শণে উদ্বদ্ধ করা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড কথাটি যেমন সত্য, সময় অবস্থা ও প্রক্ষাপটে আমাদের কিছু আচরনিক পরিবর্তন হয়েছে। তাই শিক্ষা জাতির মেরুদন্ডের সাথে যুক্ত করতে পারি সু-শিক্ষায় জাতির মেরুদন্ড। সু-শিক্ষা একটি জাতির সারাজীবনে সঙ্গী হিসেবে কাজ করে থাকে। যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার ভিত্তিস্থাপন করা হয়ে থাকে। প্রতিটি শিশুর মননে সততা, নৈতিকতা, দেশপ্রেমের বীজ বপন করে দিতে পারলে, সে একদিন একটি দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা, ঔপনৈবেশিক, ব্রিটিশ শাসনামলে একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭ অনুচ্ছেদে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে সর্বজনীন, গণমুখী, অবৈতনিক ও বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতির ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় ডিজিটাল টেকনোলজি যথেষ্ট ছোঁয়ার প্রতিফলন ঘটছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত দেশপ্রেমিক, উৎপাদনমূখী, অভিযোজনে সক্ষম সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক গড়ে তুলতে রুপরেখা ২০২১ হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। র্স্মাট বাংলাদেশ গড়তে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকায় অগ্রাধিকার পাবে। সঠিকভাবে পাঠদানের মাধ্যমেই আগামীর প্রজম্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে। যার মধ্যে দিয়ে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ভিষন পূর্ণ হবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরী, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রদান করা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া, প্রোজেক্ট, ল্যাবটপ এবং মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন। অনেক বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে শিক্ষকদের জন্য ডিজিটাল হাজিরা।ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান,ইউনিক আইডি প্রদান, জুম, গুগল মিট ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া এমনকি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে হোয়াইট এপ্স ব্যবহার করে বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হচ্ছে। এই সমস্ত কাজগুলো করতে অবশ্যই শিক্ষককে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে।প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাই শিক্ষককে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সোনার বাংলা, তথা উন্নত বাংলাদেশ গড়ার। বাঙালি জাতিকে সম্মানজনক জীবন যাপনের ব্যবস্থা করা। বর্তমান প্রজন্মের জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। বিজ্ঞান প্রযুক্তির জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে, তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা, যোক্তিক, উদ্ভাবনীমূলক দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। তথ্য অনুসন্ধান, বিশ্লেষণমূলক, তথ্য যোগাযোগ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা ২০২১ অবলোকন বাস্তবায়নসহ বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনত হবে।